মানিকগঞ্জের ঘিওর নৌকার হাট ক্রেতা আর বিক্রেতারদের আগমনে মুখরিত হযে উঠেছে। এবার নদীনালা ও নিচু এলাকায় পানি উঠায় নৌকার চাহিদা বেড়েছে। বেচাকেনায় জমে উঠেছে নৌকার হাট।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি ও হাকডাকে মুখরিত হয়ে থাকে ঐতিহ্যবাহী এই ডিঙি নৌকার হাট। মানিকগঞ্জের ভেতর দিয়ে পদ্মা-যমুনা, ধলেশ্বরী, ইছামতি ও কালীগঙ্গা নদী প্রবাহিত হওয়ায় নদীর পানি দ্রুত মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রবশে করে এবং বিস্তির্ণ নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। ফলে নৌকা হয়ে উঠে যাতাযাতের সহজ বাহন। জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে হরিরামপুর, শিবালয়, ঘিওর, দৌলতপুর ও সাটুরিয়া উপজেলাগুলি নদীতীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল হওয়ায় ওই এলাকার প্রতিটি পরিবারেরই থাকে নিজস্ব একটি নৌকা।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ঘিওর সরকারী কলেজ সংলগ্ন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে এ বিশাল নৌকার হাট বসে প্রতি বুধবার। গত ৫০ বছর ধরে এই হাটে নৌকা বেচাকেনা হয়ে আসছে। মানিকগঞ্জ জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা টাঙ্গাইলের নাগরপুর, ঢাকা জেলার সাভার ও সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে নৌকা আসে এই হাটে। মেহগনি, কড়ই, আম চাম্বল, রেন্ট্রি গাছের কাঠ দিয়ে নৌকাগুলো তৈরি করা হয়। আকার ও মানভেদে প্রতিটি ডিঙি নৌকা বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকায়।
বিক্রেতারা জানায়, অনেক জায়গায় বন্যা হলেও মানিকগঞ্জে এখনও ভালোভাবে বর্ষাই হয় নাই। এ কারণে নৌকার বিক্রী কম। তবে পানি বাড়ার সঙ্গে নৌকারও চাহিদা বাড়বে। নৌকা বিক্রেতারা জানান, নৌকা তৈরির সকল সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। তাই এখন আর নৌকা বিক্রেতে লাভ হয় না। নাগরপুর থেকে আসা শাহরিয়ার আলম বলেন, ছেলের শখের জন্য নৌকা কেনা। একটি ডিঙ্গী নৌকা সাত হাজার টাকা দিয়ে কিনলাম। বছর দুয়েক আগে এরকম একটি নৌকা বিক্রী হয়েছে পাঁচ হাজার টাকায়।
ঘিওর হাটে আসা ক্রেতা বিক্রেতারা জানান, প্রতি বুধবার শত শত নৌকা নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারীরা এ হাটে আসেন। এখানে সুলভ মূল্যে নৌকা বেচা কেনা হয়। এ কারণে এই হাটের খ্যাতি রয়েছে দেশ জুড়ে। এ ছাড়া হরিরামপুরের ঝিটকা হাটেও প্রচুর নৌকা বেচাকেনা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ