পাহাড়ে মাশরুম চাষ করে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন কৃষি উদ্যোক্তা মো. হারুন। ২০১৭ সালে প্রথমে অল্প টাকায় পারিবারিকভাবে মাশরুম চাষ শুরু করেন তিনি। সেই সময় ছেলেমেয়েদের সাথে নিয়ে মাশরুম চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েন এই উদ্যোক্তা। কৃষি বিভাগের সহায়তায় এখন হারুন পরিপূর্ণভাবে মাশরুম চাষ অব্যাহত রেখেছেন।
বর্তমানে ১৩ শতক জায়গার উপর মাশরুমের চাষ করেন তিনি। মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যার ফলে উৎপাদন যতই হোক না কেন মাশরুম চাহিদা অনুযায়ী ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না তিনি। হারুনের দুই সন্তান; এক ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে। বাড়ির পাশেই মাশরুম চাষের খামার হওয়ায় সকলেই একাজে হারুনকে সময় দিচ্ছেন।
মো. হারুন বলেন, এক মাসে মাশরুমের জন্য যে সিলিন্ডার রয়েছে তা থেকে উৎপাদন হচ্ছে প্রচুর। প্রতিদিন ঘরে ১০ থেকে ১৫ কেজি মাশররুম বিক্রি করেন। প্রতি কেজি ৪০০ থেকে সাড়ে চারশ টাকা বিক্রি করে থাকেন। তার মাশরুম চাষে রয়েছে কর্মচারীও। প্রতিমাসে হারুনের ৮০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা আয় হয়। তা দিয়ে স্বাচ্ছন্দে সংসার চলছে।
তার খামারে র্কমরত এক কর্মচারী জানান, তাকে প্রতিদিন ৭০০ টাকা করে দৈনিক মজুরি দেয়া হচ্ছে। প্রায় ২ হাজার সিলিন্ডার রয়েছে। এগুলোতে বীজ দেওয়া হয়েছে থাকে। ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে মাশরুমের উৎপাদন হতে সময় লাগে।
মাশরুম উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে খড় আর স' মিলের কাঠের ভুষি। যা প্লাস্টিকের একটি সিলিন্ডারে ভরে রাখা হয়। পরে তাতে বীজ ঢুকিয়ে দেয়া হয়। সপ্তাহাকাল পার হলেই সিলিন্ডার ভেদ করে মাশরুম গজিয়ে উৎপাদন শুরু হয়। হারুনের দেখাদেখি জেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন নতুন চাষি তৈরি হচ্ছে। এ মাশরুম চাষ খাগড়াছড়িতে কৃষির অর্থনীতিতে একটা বড় ভূমিকা রাখছে।
সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মুক্তা চাকমা জানান, মাশরুম চাষে উদ্যোক্তাদের আমাদের কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করার জন্য মাশরুম চাষ ও সম্প্রসারণ এর মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র হ্রাসকরণ প্রকল্পের আওতায় এনে চাষ থেকে শুরু করে পানি সেচসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। মাশরুম চাষ কৃষি অর্থনীতিতে অনেক ভূমিকা রেখেছে। মাশরুমের যে পুষ্টি গুনাগুন সেই কারণে অনেকই এটি চাষ করতে আগ্রহী।
তিনি আরও জানান, প্রকল্পের আওতায় মাশরুম চাষে কৃষকদের যদি হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তাহলে আরও উদ্যোক্তা তৈরি হবে। পাশাপাশি আমাদের পুষ্টির যে চাহিদা তাও পূরণ হবে। একই সাথে আমাদের যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সেটাও পূরণ সম্ভব।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ