গলাচিপায় টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে আমনের বীজতলা এখন পানির নিচে। পানি জমে থাকায় আমনের বীজ পঁচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানের জলকপাটগুলো বেহাল হওয়ায় বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না। আর বাকি জলকপাটগুলো প্রভাবশালীদের দখলে। এছাড়া নির্মাণাধীন স্লুইজের দুই পাশে বাঁধ দেয়ায় ৪ গ্রামের মাঠ-ঘাট এখন পানির নিচে। ফলে ক্ষতির মুখে রয়েছে উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক।
জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলায় আমন চাষাবাদ হয় ৩৬ হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রায় ৩৯ হাজার কৃষক আমন আবাদ করে। অধিকাংশ কৃষক নিজেরাই বীজতলা তৈরি করেন। বিআর-১১, ব্রি-২২, ব্রি-২৩, ব্রি-৩১, ব্রি-৪৯, ব্রি-৫২, ব্রি-৮৭, স্বর্ণমুশরি, স্বর্ণ-গোটা জাতের বীজ দিয়ে কৃষকরা চাষাবাদ করে থাকে। টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে মাঠ-ঘাট পানিতে থই থই করছে। পানিতে তলিয়ে বীজতলার বীজ পঁচে যাওয়ার উপক্রম হওয়ার পথে। যদি পঁচে যায় তাহলে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হবে। এতে বিপাকে পড়বেন কৃষকরা। এছাড়া বিভিন্ন জায়গার পানের বরজ তলিয়ে গেছে বলেও জানা যায়। গলাচিপা সদর ইউনিয়নের চরখালী গ্রামের সত্তার গাজী, দুলাল গাজী, হাবিব আকনের ২৩ কুড়ি পান গাছের গোড়া তলিয়ে আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, গলাচিপা উপজেলার বেশিরভাগ খালগুলো বেদখল হয়ে আছে। খালগুলোর উপর প্রভাবশালীরা পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করছে। এতে সকল ইউনিয়নেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
গলাচিপা উপজেলা কৃষি অফিসার আরজু আক্তার জানান, এ উপজেলার বোয়ালিয়া, অক্ষারাম, পানপট্টি খলিফা বাড়ি সংলগ্ন জলকপাটসহ ৫টি জলকপাট সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে জলকপাটগুলো সংস্কার করা হবে। টানা বৃষ্টিতে পানি জমে আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে। পানি কমে গেলে ও বৃষ্টি না হলে আশা করি কৃষকদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল