‘মুরুব্বি মুরুব্বি উঁহু উঁহু’ চট্টগ্রামের আনোয়ারায় এক বৃদ্ধকে উদ্দেশ্য করে বাক্যটি উচ্চারণ করেছিল এক কিশোরী ও তার সাথীরা। সেই কথা বলাই কাল হয়েছে। এই কারণেই মাথায় গরম পানি ঢেলে ওই কিশোরীকে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত বুধবার বিকেলে উপজেলার জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াইজারো বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে আজ রবিবার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানাজানি হয়।
আহত কিশোরীর নাম পপি আকতার (১২)। বর্তমানে সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পপি আকতারের বাবা মফিজুর রহমান ৯ বছর আগে এবং মা বেবী আকতার সাত বছর আগে মারা গেছেন। ওই কিশোরী জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নে তার নানাবাড়িতে বসবাস করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার বিকেলে আরও কিছু শিশু-কিশোরের সঙ্গে ওই কিশোরী নানাবাড়ির উঠানে খেলছিল। এ সময় এয়ার মোহাম্মদ (৬৫) নামের স্থানীয় এক বৃদ্ধকে দেখে খেলারত শিশু-কিশোরদের সবাই ‘মুরুব্বি মুরুব্বি উঁহু উঁহু’ করে দুষ্টুমি শুরু করে। এয়ার মোহাম্মদ এতে ক্ষিপ্ত হলেও শিশু-কিশোরদের কিছু না বলে ঘরে ঢুকে যান। কিছুক্ষণ পর এয়ার মোহাম্মদের ছোট ভাই মৃত আবুল কালামের স্ত্রী সায়েরা খাতুন (৬০) গরম পানি নিয়ে উঠানে আসেন। একপর্যায়ে কিশোরী পপি আকতারের মাথায় গরম পানি ঢেলে দেন। এতে পপি আক্তার চিৎকার দিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি শুরু করে। এলাকার লোকজন পপিকে প্রথমে বাড়ির পুকুরের পানিতে ভিজিয়ে আনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে শারীরিক অবস্থা শঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পপি আকতারের নানা আমির হোসেন বলেন, ‘মা-বাবা হারা আমার নাতিকে ঘরে রেখে লালন-পালন করছিলাম। বাড়ির উঠানে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় আমার চাচাতো ভাই এয়ার মোহাম্মদের সঙ্গে নানা হিসেবে দুষ্টুমি করেছে। কিন্তু এরপর গরম পানি দিয়ে নাতিটিকে ঝলসে দেওয়া হলো।’
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত এয়ার মোহাম্মদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান, ঘটনার পর থেকে পারিবারটি আত্মগোপনে চলে যায়।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন বলেন, ‘আমি ঘটনা শোনার পর কিশোরীর অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল