ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনকারী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থক ও হেফাজত সমর্থিত সীরাতুন্নবী (সা.) উদযাপনকারী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সোমবার দুপুরে উপজেলা কদমতলী এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনকারী সমর্থকের দ্বারা আড়াইবাড়ী মাদরাসা, কদমতলীতে কোরআনের ভাষ্কর্য ভাংচুর করার অভিযোগে এলাকাবাসীও মিলাদুন্নবী (সা.) সমর্থকদের উপর চড়াও হয়। এতে করে দুই দলের সমর্থক ও গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে এক পর্যায়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় উপজেলার কদমতলী এলাকা। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কদমতলী এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার।
জানা যায়, সোমবার পৌরশহরের সুপার মার্কেট চত্ত্বরে হেফাজত সমর্থিতদের সীরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন উপজেলা হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে কদমতলী এলাকায় সুন্নী সম্প্রদায়ের ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে পুরকুইল দরবারের পীর মাওলানা ছদর উদ্দিন। পরে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালনকারীরা ও হেফাজত সমর্থিত সীরাতুন্নবী (সা.) পালনকারী এবং আড়াইবাড়ী গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়ায়।
হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রিয় যুগ্ম প্রচার সম্পাদক মাওলানা ইয়াকুব উসমানী জানান, পৌরসভার সুপার মার্কেট চত্ত্বরে তাদের পক্ষ থেকে সীরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। তাদের লোকজন একত্রিত হওয়ার জন্য কদমতলী কোরআন ভাষ্কর্যের সামনে সমবেত হতে থাকে। সকাল ১০টার দিকে টিআলী বাড়ির মোড় থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী পুরকুইল দরবার শরীফের পীর ছদর উদ্দিন সাহেবের সমর্থিতরা এসে তাদের উপর হামলা করে এবং কোরআনের ভাষ্কর্য ও আড়াইবাড়ী মাদরাসায় আক্রমণ করে। পরে তাদের সাথে আমাদের সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আড়াইবাড়ী মাদরাসায় আক্রমণ করায় গ্রামবাসীও তাদের উপর চড়াও হয়।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) সমর্থিত পুরকুইল দরবার শরীফের পীর সাহেব মাওলানা ছদর উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই পারিনি। এর আগেই হেফাজত সমর্থিত লোকজন নিজেরাই কোরআনের ভাষ্কর্য ও আড়াইবাড়ী মাদরাসায় আক্রমণ করে আমাদেরকে দোষারোপ করে গ্রামবাসীকে ক্ষেপিয়ে দিয়েছে আমাদের জশনে জুলুশ বানচাল করার জন্য এবং আমার সাথে যাওয়া লোকজনের উপর হামলা করেন। আমার বহু লোকজন আহত হয়েছে।
আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীর সাহেব মাওলানা গোলাম খাবির সাঈদি বলেন, হেফাজত নেতাদের সাথে জশনে জুলুশ নিয়ে সুন্নী সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। জশনে জুলশকারীরা আমাদের মাদরাসায় ও কদমতলী মোড়ে কোরআনের ভাষ্কর্য ভাংচুর করে বলে দাবি করেন। মাদরাসায় হামলা করায় গ্রামবাসী তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ