মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের বাংলাদেশ সফর দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের বন্ধুত্ব নতুন সোপানে উন্নীত করেছে। মাত্র চার ঘণ্টার এ সফরে এসে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ড. ইউনূস তাঁর পুরনো বন্ধু। নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের দ্বার উন্মোচনে মুখিয়ে আছে তাঁর দেশ। বাংলাদেশকে কৌশলগত অংশীদার থেকে ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্কে উন্নীত করার ঘোষণা দেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশীয় নেতা বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রমবাজার খুলে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি রক্ষায় প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে ১৮ হাজার শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। বাংলাদেশ পূর্বমুখী সহযোগিতা সম্প্রসারণে আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারশিপ’ হওয়ার প্রত্যাশা পূরণেও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন আনোয়ার ইব্রাহিম। বলেন, বাংলাদেশি পণ্যে হালাল সার্টিফিকেশনে দক্ষতা বাড়াতে টেকনিক্যাল সহায়তা করা হবে। সংক্ষিপ্ত সফরকালে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে একমত প্রকাশ করে উভয় পক্ষ। ওই বৈঠকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সুখবর দেওয়া হয়। মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে তাঁর। তিনি বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আসিয়ানে নিজেদের প্রভাব খাটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। মালয়েশিয়া আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে। মালয়েশিয়াসহ আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে যৌক্তিক কারণেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী বাংলাদেশ। ঢাকা-কুয়ালালামপুর সম্পর্ক ভূ-রাজনৈতিকবহ এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যের দাবিদার। মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের ফলশ্রুতিতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নতুন সোপানে উন্নীত হবে- এমনটিই আশা করা হচ্ছে।