কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন একটি সর্বজনীন আন্দোলন। এ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের নৈতিক ও রাজনৈতিক পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে। গতকাল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সহসম্পাদক জাকির হোসেন, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, ঢাকা মহানগর কমিটির সম্পাদক জুবাইরুল হক নাহিদ প্রমুখ। এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগ গত তিনটি নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে জনগণের সম্মতিবিহীন একটি সরকার গঠন করেছে, যার কোনো লেজিটিমেসি নেই। এ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জনগণের অন্যান্য রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার হরণ করেছে। আমরা খুনসহ সব অন্যায়ের ন্যায়বিচার চাই।
আমাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে দলীয় পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত করার অবসান চাই, তা না হলে বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার থাকবে না। তিনি বলেন, তরুণদের সমর্থনে ২০০৮ সালে আওয়ামী সরকার গঠন করেছিল। কিন্তু সেই তরুণরাই এখন আওয়ামী লীগের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ছাত্রসমাজ ও তরুণরা যে দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছে তার সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি এবং তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, কোটা আন্দোলনসহ অন্যান্য আন্দোলন হলো রোগের উপসর্গ মাত্র, রোগটা হলো ব্যাপক, গুরুতর ও ভয়াবহ। অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ২০২৪ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন একটি সর্বজনীন আন্দোলন। এ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের নৈতিক ও রাজনৈতিক পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে। তরুণরা তাদের আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দেখিয়েছে কীভাবে নতুন সংবিধান লিখতে হয়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিরাজমান সংকট নিরসনে সরকারের দিক থেকে কোনো আন্তরিক ও কার্যকর প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। এত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে যে তা ক্ষমা করার কোনো সুযোগ নেই। এবার যদি বিচার না পাই, তাহলে হয়তো বাংলাদেশ থেকে বিচার শব্দটা একেবারেই উঠে যাবে।