শীতের দিনে গোসল করা নিয়ে অনেকেই উৎকণ্ঠায় থাকেন, বিশেষ করে গরম পানির ব্যবস্থা না থাকলে। প্রতিদিন গোসল করা কি আসলেই জরুরি? আসলে প্রতিদিন গোসল করা একটি সামাজিক রীতি এবং ব্যক্তিগত অভ্যাস, ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকরও বটে। আসুন গোসলের সঙ্গে স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে কিছু বিষয় জেনে নেই। কতবার গোসল প্রয়োজন : প্রতিদিন গোসলের প্রয়োজন নেই এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা একমত হলেও সপ্তাহে ঠিক কতবার গোসলের প্রয়োজন এই বিষয়ে নানা মত রয়েছে। ত্বকের ধরনের ওপর ভিত্তি করে সপ্তাহে এক বা দুই দিন কিংবা ১/২/৩ দিন পরপর গোসল করা যেতে পারে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা ১/২ দিন পরপর আর যাদের শুষ্কত্বক তারা সপ্তাহে ১/২ দিন গোসল করতে পারেন। তবে যারা অতিরিক্ত ঘামেন, ব্যায়াম করেন কিংবা স্যাঁতসেঁতে নোংরা পরিবেশে কাজ করেন তাদের প্রতিদিনই গোসল করা প্রয়োজন। প্রতিদিন গোসলের প্রয়োজন না থাকলেও হাত এবং মুখ পরিষ্কার ও যত্ন নিতে হবে অবশ্যই।
প্রতিদিন গোসলের ক্ষতি কী? : আমাদের ত্বক থেকে এক ধরনের তেল নিঃসরিত হয় যা ত্বককে মসৃণ এবং উজ্জ্বল রাখে। আবার ত্বকে কয়েক ধরনের স্বাস্থ্যকর জীবাণু বাস করে যারা রোগ প্রতিরোধক হিসেবে ভূমিকা রাখে। গোসলের সময় তেল এবং এসব জীবাণু পরিষ্কার হয়ে যায়, যা ত্বক এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অনেক সময় ত্বক উজ্জ্বলতা হারিয়ে খসখসে রূপ নিতে পারে। যে কারণে চুলকানি অনুভূতি হতে পারে। আবার ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগও হতে পারে।
কীভাবে গোসল করবেন : কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে দ্রুত গোসল সেরে ফেলুন। মনে রাখবেন শরীরের সব স্থানে এবং প্রতিবার গোসলেই সাবানের প্রয়োজনীয়তা নেই। হাত, মুখ, বগল এবং উরু এলাকায় সাবান ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। * গোসল না করলে তোয়ালে ভিজিয়ে গা মুছে ফেলতে পারেন। * গোসলের পর নিজের পছন্দমতো বা ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।মনে রাখবেন শীতকালে ত্বক শুষ্ক থাকে তাই প্রতিদিন গোসল নিয়ে উৎকণ্ঠিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, বরং প্রতিদিন গোসল না করাই স্বাস্থ্যকর। তবে এজন্য ধুলাবালি এবং স্যাঁতসেঁতে নোংরা পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। প্রতিদিন গোসল করা যেমন স্বাস্থ্যকর নয়, তেমনি একবারে গোসল না করলেও নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই আপনার ত্বকের ধরন এবং পেশার ওপর ভিত্তি করে সপ্তাহে গোসলের রুটিন ঠিক করে নিন। ত্বকের ধরন নির্ণয় করতে একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
এম আর করিম রেজা, জাকার্তা প্রবাসী
ত্বক এবং সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ।