মো. নূরুল হক ( ছদ্মনাম )। বয়স ৬৫। তিনি এখন দাদা। নাতিনাতনি নিয়ে ভালোই দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ নামাজ পড়তে ও টয়লেট ব্যবহার করতে অসুবিধা বোধ করছেন, কারণ উঠতে-বসতে তাঁর হাঁটুতে ব্যথা হয় এবং মাঝেমধ্যে ফুলে ওঠে। আসলে তিনি এমন একটি হাড়ক্ষয়জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন যাকে সাধারণ মানুষ হাঁটুব্যথা বলে। আর চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে ‘অস্টিওআর্থ্রাইটিস আব নি’ বলা হয়। হাঁটুব্যথা শুধু ক্ষয়জনিত রোগেই নয়, বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সেপটিক আর্থ্রাইটিস, গাউট, সোরিয়েটিক আর্থ্রাইটিস, এনকাইলজিং স্পন্ডাইলাইটিস, এসএলই ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে বেশি হাঁটুব্যথা সাধারণত অস্থিক্ষয়ের জন্যই হয়ে থাকে। জোড়ার ভিতর আঠালো এক প্রকার পদার্থ থাকে যা জোড়াকে নড়াচড়া করতে সহজ করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে এ তরল পদার্থ শুকিয়ে গেলেও এ রোগ দেখা দেয়। এ সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। অস্বাভাবিক ক্রিয়াবিক্রিয়ার ফলে আস্তে আস্তে রোগের প্রতিক্রিয়া লক্ষণ পায়। প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা গরম হওয়া, ফুলে যাওয়া এবং হাঁটু নড়াচড়া করলে ব্যথা হয়।
চিকিৎসা : এ রোগের প্রধান কারণ ক্ষয়জনিত সমস্যা তাই এর প্রধান চিকিৎসা রিহেব ফিজিও। তবে সেজন্য অনেক ক্ষেত্রে ওষুধের পাশাপাশি রিহেব ফিজিও চিকিৎসা অনেক ফলদায়ক। বিশেষজ্ঞ রিহেব-ফিজিও চিকিৎসকরা রোগ নির্ণয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তার মধ্যে ইলেকট্রোমেগনেটিক রেডিয়েশন ফ্রিকোয়েন্সি সাউন্ড, অতিলোহিত রশ্মি, ড্রাইনিডেলিং, মেগনেটোথেরাপি ও বিভিন্ন প্রকার ব্যায়ামের মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এমনকি সারা জীবন রোগীকে কিছু উপদেশ অবশ্যই মানতে হয়। যেমন ডায়াবেটিস ও শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করা।
ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান
ফিজিওথেরাপি, ডিজঅ্যাবিলিটিস ও রিহেবিলিটেশন স্পেশালিস্ট ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা