রাশিয়া তাদের সক্রিয় সেনাবাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে। সীমান্তে নতুন করে হুমকি এবং পশ্চিমা আগ্রাসী মনোভাবের প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি সরকারি নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেন। এই আদেশে রুশ বাহিনীতে নতুন করে এক লাখ ৮০ হাজার সেনা যোগ হবে। এর মাধ্যমে রাশিয়া পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সক্রিয় সেনাবাহিনী হিসেবে অবস্থান করছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, আমাদের সীমান্তের চারপাশে বিভিন্ন নতুন হুমকি সৃষ্টি হয়েছে, যা আমাদের এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। তিনি আরও যোগ করেন, পশ্চিম সীমান্তে শত্রুভাবাপন্ন পরিস্থিতি এবং পূর্ব সীমান্তে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির কারণেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত পুতিন তিনবার রুশ সেনাবাহিনীকে সম্প্রসারণ করেছেন। তার সাম্প্রতিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই প্রায় সাত লাখ রুশ সেনা মোতায়েন রয়েছে। রাশিয়ার সামরিক বাহিনী বর্তমানে সীমান্তের বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করতে বাধ্য হয়েছে, বিশেষত কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের হামলা প্রতিহত করতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়া, পূর্ব ইউক্রেনেও রুশ বাহিনী হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে। যার কারণে সেখানে সংঘর্ষ তীব্রতর হয়েছে। যদিও দুই পক্ষই হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করছে না। তবে বিশ্লেষকদের মতে, গত দুই বছরের যুদ্ধে উভয় পক্ষেরই প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লাখো মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা করা হচ্ছে।
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে তাদের সীমান্তে ন্যাটোর কার্যক্রমকে হুমকি হিসেবে তুলে ধরেছে। মস্কো দাবি করে আসছে, ন্যাটোর এই কার্যক্রম তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক। তবে ন্যাটোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা কেবল একটি প্রতিরক্ষামূলক জোট এবং কোনোভাবেই রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে আগ্রহী নয়। ন্যাটো আরও দাবি করেছে, রাশিয়ার আক্রমণাত্মক নীতি ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে হস্তক্ষেপের কারণে এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে, যা সংঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল