যতদূর চোখ যায় শুধু ধু ধু করছে বালি আর বালি, মাঝে মধ্যে কোথাও কোথাও মাথা তুলে আছে খেজুর গাছ। সাহারা মরুভূমির কথা বলতেই এমন ছবি ভেসে ওঠে। আর এই অবস্থা চলছে যুগের পর যুগ। তবে সাহারার সেই চেহারা হঠাৎ করেই বদলে গেছে। ৫৯ বছর পর সাহারার তপ্ত বালুর বুকে বৃষ্টি হয়েছে। তবে সেটা কিছুক্ষণের জন্য নয় টানা দুই দিন। আর তাতেই সাহারার বুকেই তৈরি হয়েছে পানিতে টইটম্বুর হ্রদ। প্রবল বৃষ্টির জেরে কার্যত বানভাসি অবস্থা রুক্ষ সাহারার। সাহারার এই বেহাল অবস্থার ছবি ধরা পড়েছে নাসার উপগ্রহ চিত্রেও।
সাহারা মরুভূমিতে বৃষ্টি একেবারে হয় না, তা নয়। মাঝেমধ্যে দু-এক পশলা বৃষ্টির দেখা মেলে সেখানে। তবে সেপ্টেম্বরের দুই দিনের টানা বৃষ্টি সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। এত অল্প সময়ে এত বৃষ্টি গত অর্ধশতকে হয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে। যার জেরেই সাহারার বুকে এমন পানিতে টইটম্বুর হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে ঠিক যেন মরূদ্যান। তবে এতে খুব একটা খুশি হওয়ার কারণ দেখছেন না বিজ্ঞানীরা।
এই বৃষ্টিতে মরুভূমির আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি বদলাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাড়তে পারে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও। থাকছে ঝড়ের সম্ভাবনাও। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা সম্প্রতি ভাবিয়ে তুলেছে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের। মরক্কোর সরকার বলেছে যে সেপ্টেম্বরে দুই দিনের বৃষ্টিপাত বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বার্ষিক গড় ছাড়িয়ে গেছে যেগুলো বার্ষিক গড় ২৫০ মিলিমিটার (১০ ইঞ্চি) এর চেয়ে কম হয়, যার মধ্যে টাটাও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে একটি। রাজধানী রাবাত থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার (২৮০ মাইল) দক্ষিণে একটি গ্রাম টাগাইনিতে ২৪-ঘণ্টা সময়ের মধ্যে প্রায় চার ইঞ্চির বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
এ অবস্থায় পরিস্থিতি ক্রমশ যে পথে এগোচ্ছে তাতে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, সাহারার চরিত্রগত পরিবর্তন ঘটাতে পারে আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা।