যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এক দশক পেরিয়ে গেলেও এখনো এ সুবিধা ফিরিয়ে আনতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ইমেজ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা পেতে চান ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া সরকার পতনের আন্দোলনের সময় সরকারি ছুটি, অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কারখানার উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষতিগ্রস্ততা কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছে সহজ শর্তে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ চান তাঁরা। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলানগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে এসব নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নতুন করে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি। ড. ইউনূসের ব্র্যান্ড ইমেজ কাজে লাগিয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পেতে চাই।’ মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, এলসি খুলতে ছয়টা ব্যাংক মার্জিন চাইছে, এ বিষয়ে কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপদেষ্টা গভর্নরের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। কারখানার নিরাপত্তা জরুরি। তবে এটা সমাধান হয়ে যাবে। এখন কোনো ঝামেলা নেই। বায়ারদের একটা আস্থার অভাব ছিল এটাও কেটে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা নিজেও বায়ারদের সঙ্গে কথা বলবেন এটা বড় পাওয়া।’ বর্তমানে ব্যবসার হালচাল প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘দেশে আকস্মিক বন্যা হওয়ার কারণে অনেক সমস্যা হয়েছে উৎপাদনে। আমাদের শত শত ট্রাক মিরসরাইয়ে পড়ে আছে। সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হচ্ছে। বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রামে সমস্যা হচ্ছে তাই নারায়ণগঞ্জের পানগাঁও পোর্ট দ্রুত উন্নয়ন বা চালু করা দরকার।’ তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পোশাকশিল্পের ঘুরে দাঁড়াতে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আনুমানিক ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা সফট লোন চেয়েছি। গত ৪৫ দিনের মধ্যে আমাদের ১৬-১৭ দিন প্রোডাকশন বন্ধ ছিল। পাশাপাশি বন্যার কারণেও চার-পাঁচ দিন রপ্তানি করা যায়নি। অনেক কারণে শুধু এ সেক্টরের জন্য সহায়তা চেয়েছি।’ বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো প্রায় ১৬ দিন চলতে পারেনি। এ কারণে আমরা একটি সফট লোনের জন্য উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করেছি। একটা মাসের জন্য যদি একটা সফট লোন দেওয়া যায়, এ লোন ইন্টারেস্টসহ এক বছরের মধ্যে আমরা ফেরত দিয়ে দেব। এ ছাড়া আরও ছোট ছোট কিছু ইস্যুও ছিল। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আমরাও এ সরকারের সঙ্গে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’