সমাজ উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপার সন্তান প্রভাষক মনোয়ার হোসেন মন্নু। নিজের বেতনের টাকায় সমাজে আলোর মশাল জ্বালাচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তার মানবসেবার কথা এলাকার মানুষের মুখে মুখে।
শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেণী গ্রামের শাহজাহান বিশ্বাস ও কুলসুম বেগমের তৃতীয় সন্তান মনোয়ার হোসেন মন্নু। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স (সম্মান) ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। কর্মজীবন শুরু করেন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মৌলানা আছাদ আলী ডিগ্রি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে। কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি সেখানে গরিব ও অসহায় শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। টিউশনির টাকা ও বেতনের টাকা দিয়ে শুরু করেন নিজ এলাকার সমাজ উন্নয়নমূলক কাজ। সেই থেকে প্রভাষক মনোয়ার হোসেন মানুষ ও সমাজের জন্য কিছু করা তার নেশায় পরিণত হয়। কোনো মানুষ ও শিক্ষার্থীদের উপকার করতে পারলে তার ভালো লাগে। নিজ গ্রামে একটি প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য ৩২ শতক জমি ক্রয় করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করেন। পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার বৈদ্যনাথপুর গ্রামে ৩০ শতক জমি ক্রয় করে আরেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। একই এলাকায় গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য ৩০ শতক জমি ক্রয় করে রেখেছেন। বর্তমানে স্বপ্ন দেখছেন একটি বৃদ্ধাশ্রম করার। এজন্য ৪ শতক জমি কিনেছেন। নিজ এলাকায় শাহজাহান-কুলসুম ফাউন্ডেশনে ব্যানারে অসহায় দুস্থ ও গরিব মানুষের সাহায্য করে থাকেন। ২০১৮ সাল থেকে শাহাজাহান-কুলসুম কল্যাণ তহবিলের মাধ্যমে ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসএসসি পাসকৃত তিনজন করে মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করছেন। এ ছাড়া করোনা ভাইরাসে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত ও কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, টাকার অভাবে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা, বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পড়ানো, সনাতন ধর্মে মেয়েদের বিবাহ কাজে সহযোগিতা, মসজিদ উন্নয়ন, কবরস্থান উন্নয়ন, ঈদগাহ মাঠ উন্নয়ন নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সম্পর্কে ত্রিবেণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন জানান, মনোয়ার হোসেন মন্নু শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সমাজ উন্নয়নে যে ভূমিকা পালন করছে তা এলাকার মানুষ সারা জীবন মনে রাখবেন। তিনি স্বল্প সাধ্যের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত বৃত্তি প্রদান করে শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন। আগামীতেও তার এ কার্যক্রম চলতে থাকবে বলে প্রত্যাশা করি।