জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের ঘোষিত ২০১৬-১৭ সেশনের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রেস ক্লাবের একাংশের সাংবাদিকেরা। একই সাথে তারা ‘নির্বাচন নিয়ে তৈরি হওয়া সংকট’ সমাধানে উপাচার্যকে ৪৮ ঘন্টার সময় বেধে দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তারা।
বুধবার রাতে নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়াই লিখিত ঘোষণায় কালের কন্ঠের জাবি প্রতিনিধি তানজিদ বসুনিয়া ও দ্য রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকমের জাবি প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ শুভকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১৬-১৭ সেশনের ১১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন। এই কমিটিকেই ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন একাংশের সাংবাদিকেরা। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনের তারিখ ও তফসিল ঘোষণা ছাড়া এই কমিটি দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন- বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল ইসলাম (শামীম রেজা), প্রত্নতত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন এবং আইন ও বিচার বিভাগের প্রভাষক ফেরদৌস রহমান। সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগটি পাঠ করে শুনান জাবি প্রেস ক্লাবের ২০১৫-১৬ সেশনের যুগ্ম-সম্পাদক জুনায়েদ আহমেদ।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাবি প্রেস ক্লাবের গত কমিটির (২০১৫-১৬ সেশনের) কার্যকরী সদস্য মো. মুসা ও আবু সায়েম এবং গত কমটির সদস্য দৈনিক জনকন্ঠের জাবি প্রতিনিধি দীপঙ্কর দাস।
উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, “ক্লাবের (প্রেসক্লাব) গঠনতন্ত্রকে তোয়াক্কা না করে, কোন প্রকার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এ কমিটি ঘোষণা করেছে। কতিপয় শিক্ষক নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে ঐ কমিটিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং সবকিছু উপাচার্যের নির্দেশেই করা হচ্ছে বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন।”
“কিন্তু জালিয়াতির বিষয়ে অভিযোগ দেয়া সত্ত্বেও কোন ব্যবস্থা না নিয়ে এই অবৈধ কমিটি ঘোষণার সাথে আপনার (উপাচার্র্যের) সংশ্লিষ্টতা আমাদের ভাবিত করে।”
“প্রেসক্লাবের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আপনাকে আগামী ৪৮ ঘন্টা তথা শনিবার বেলা ২টার মধ্যে এই অবৈধ কমিটি বাতিল করে সমস্যা সমাধান করার অনুরোধ করছি। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবো।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপাচার্যকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নির্বাচন কমিশনার ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রেজাউল ইসলামকে (শামীম রেজা) একাধিকবার ফোন দিলে তিনিও ফোন ধরেননি।
অপর দুই নির্বাচন কমিশনার প্রত্নতত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন এবং আইন ও বিচার বিভাগের প্রভাষক ফেরদৌস রহমান উভয়ই বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংবিধান না মানার অভিযোগ সত্য নয়। প্রেস ক্লাবের সংবিধান মেনে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করেই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সংবিধান ভঙ্গ করা হয়নি।
তফসিল ও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা ছাড়া কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে- এমন অভিযোগের জবাবে এই দুই নির্বাচন কমিশনার বলেন, “সবকিছু সংবিধান মেনেই করা হয়েছে, এর বেশিকিছু বলতে পারব না।”
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার