‘পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের বিষয় কোড পিএসসি’তে (সরকারি কর্ম কমিশন) অন্তর্ভুক্তির দাবি কতটা যৌক্তিক সে বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন বিভাগের শিক্ষকরা। বিভাগের শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা যে দাবি করছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এছাড়াও ফলিত পরিসংখ্যানের সঙ্গে সিলেবাসের মিল সংক্রান্ত শিক্ষার্থীরা যে বক্তব্য দিয়েছে তাও সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন শিক্ষকরা।
শনিবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনে বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিষয়কোড অন্তর্ভুক্তি ও বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মন্ডল।
সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সর্বমোট ক্রেডিট ১৬০। যার মধ্যে ১২৮ ক্রেডিট তত্ত্বীয়, ২৪ ক্রেডিট ব্যবহারিক ও ৮ ক্রেডিট মৌখিক। তত্ত্বীয় ক্রেডিটের মধ্যে ৬৪ ক্রেডিট পপুলেশন সাইন্স সম্পর্কিত, ১৬ ক্রেডিট হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত, ২০ ক্রেডিট পরিসংখ্যান সম্পর্কিত এবং বাকি ক্রেডিটগুলো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কিত। শিক্ষার্থীরা যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগের সাথে আমাদের বিভাগের সিলেবাসের শতকরা ৭০ ভাগ সাদৃশ্যের কথা বলছেন সেখানে আমরা এলিমেন্ট ম্যাচিং পদ্ধতিতে দেখেছি তাদের সিলেবাসের সাথে আমাদের বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের অনার্সের সিলেবাসের মাত্র শতকরা ২০.৩ ভাগ সাদৃশ্য রয়েছে।
কেন বিভাগের নাম পরিবর্তন করা যাবে না জানতে চাইলে বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম খান বলেন, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগে যেখানে শুধু মাত্র শতকার ২০ ভাগ পরিসংখ্যান সম্পর্কিত সেখানে বিভাগের নাম পরিবর্তনের কোনো প্রশ্নই আসে না। বিজ্ঞান অনুষদের একটি বিভাগ হিসেবে আমরা যখন শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাই তখন দুই একটা কোর্স পরিসংখানের কয়েকটি কোর্সের সাথে মিলেই যায়। আর বিজ্ঞান অনুষদ ছাড়াও যেকোনো অনুষদের বিভাগের ক্ষেত্রে এমনটি হয়, অনেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী হয়েও তাদের পরিসংখ্যানের কোর্স থাকে।
পপুলেশন সায়েন্সের সাথে হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বাদ দেয়া যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে দ্রুত বর্ধমান জনসংখ্যা একটি বিরাট সমস্যা, তাদেরকে সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে জনসম্পদে পরিণত করাই এ বিভাগের লক্ষ্য। এমন একটি যুগোপযোগী বিভাগের নামের কিছু অংশ বাদ এবং সিলেবাস পরিবর্তন করা যৌক্তিক নয়।
এদিকে, পিএসসি’তে বিষয় কোড অন্তর্ভুক্তের দাবি জানিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত বুধবার থেকে প্রায় ৬৪ ঘণ্টা অনশন করে আসছিলেন। শনিবার রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামী ২ ফেব্রুয়ারি আলোচনায় বসার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অনশন স্থগিত করেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন