বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার ও এর প্রতিবাদের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। মঙ্গলবার সংগঠনটির ৬০ জন শিক্ষক কর্তৃক স্বাক্ষরিত এই বিবৃতি দেয় সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে নিজ মেসে ফেরার সময় গোপালগঞ্জ শহরের নবীনবাগে অবস্থিত জেলা প্রশাসন স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনে একদল দুর্বৃত্ত তাকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ করায়, ২৪ ফেব্রুয়ারি বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাসের অদূরে ঘোনাপাড়া নামক স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপর এলাকাবাসীসহ ছাত্রলীগের একাংশ হামলা করে, যা আসলে ধর্ষকদের পক্ষাবলম্বন। এখনও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের হুমকি দিয়ে ও প্রচারণার মাধ্যমে আন্দোলনকে নস্যাৎ করার পায়তারা চলছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই ধর্ষণের ঘটনায়ও নানান ভাবে নারী শিক্ষার্থীর রাতের বাইরে থাকা বা বন্ধুর সাথে থাকার মত অপ্রাসঙ্গিক বিষয় সামনে এনে ধর্ষণের দায় ভিক্টিমের ওপর চাপানো হচ্ছে। নানাভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে মুখামুখি দাঁড় করানোর একটা অপচেষ্টাও বলবৎ আছে।
এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ এবং নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সকল মহলের দাবীর প্রেক্ষিতে অল্প সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করায় আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই, বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দ্রুততম সময়ে নিপীড়িতের পক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ায় তাদের সাধুবাদ জানাই। দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসসহ বশেমুরবিপ্রবির আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানাই।
তাদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে, সব রকমের ভিক্টিম ব্লেমিং এবং ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীর চরিত্রের কেলেংকারীকরণ বন্ধ করে দায়ীদের শাস্তি দেওয়া, ভিক্টিমের শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা এবং তার সুস্থতা নিশ্চিতকরণ, বশেমুরবিপ্রবি'র সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রভৃতি।
বিবৃতিটিতে ই-স্বাক্ষর করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মানস চৌধুরী ও অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, একই বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, সহকারী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌভিক রেজা প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল