সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সামান্য ঘটনার জের ধরে সংঘটিত দুদিনের সংঘর্ষ বিচার-সালিশের দিকে মোড় নিয়েছে। মুঠোফোনে চার্জ দেওয়া নিয়ে গত শনিবার রাত ও রবিবার দিনে সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। তবে বিচার-সালিশের পথে যাওয়ায় কোনো পক্ষ মামলা করেননি। বিচারের জামানত হিসেবে উভয়পক্ষ থেকে ২৫ লাখ টাকা করে নেওয়া হবে।
জানা যায়, শনিবার বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ থানাসদর পয়েন্টের রনি ফার্মেসিতে মোবাইল চার্জ দিতে যান পার্শ্ববর্তী বর্ণি গ্রামের আব্দুল মজিদ বাবুল। ফার্মেসিতে থাকা কাঁঠালবাড়ি গ্রামের শাহিনুর মিয়া ফোন চার্জের বিনিময়ে সিগারেট খেতে চান। এ নিয়ে তাদের মাঝে বাক-বিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে তারা হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। এই বিরোধ পরে সিলেটি ও বহিরাগত ইস্যুতে রূপ নিয়ে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। পরে থানাপুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও সিলেট থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এদিকে, পরদিন রবিবার সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ায় দু’পক্ষ। এসময় কোম্পানীগঞ্জ থানাসদর, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী- এই তিন গ্রামের লোকজন বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। দ্বিতীয় দিনের সংঘর্ষে আরও শতাধিক লোক আহত হন বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়। ওই দিন দুপুর ১টার দিকে সেনাবাহিনী গিয়ে সংঘর্ষ থামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।
পরে রবিবার বিকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানা, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আব্দুল হাকিম চৌধুরী, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়াসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মুরুব্বিদের হস্তক্ষেপে উভয় পক্ষ সমঝোতায় যেতে সম্মত হয়। এসময় সালিশরা ৫০ লাখ টাকা জামানতে বিচারের দিন ধার্য্য করে স্ট্যাম্পে উভয়পক্ষে স্বাক্ষর নেন। এসময় বলা হয়- এরপর থেকে কেউ যদি ফেসবুকে বা সরসারি বিষয়টি নিয়ে তর্কবিতর্ক বা ঝগড়ায় লিপ্ত হন তাহলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজাইর আল মাহমুদ আদনান বলেন- দুদিনের সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। তবে কারো অবস্থা গুরুতর নয়। সবাই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি বলেন- সংঘর্ষের পর বিষয়টি বিচার-সালিশের পথে যাওয়ায় কোনো পক্ষ মামলা দায়ের করেননি।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল