প্রসবকালে ‘ভুল ও অবহেলায়’ এক বিচারকের স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগে চট্টগ্রামের দুই চিকিৎসকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম হারুনুর রশিদ এ পরোয়ানা জারি করেন।
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া দুই চিকিৎসক হলেন: গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. কাজল রেখা রানী ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারির রেজিস্ট্রার ডা. দেবাশীষ তালুকদার এবং অপরজন হলেন নগরীর পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জব্বার।
গত ৩ জুন ভোর সাড়ে ৬টায় নগরীর ৫৭, কেবি ফজলুল কাদের চৌধুরী রোডের পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে সায়মার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর প্রায় ৫ ঘণ্টা আগে তিনি এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।
মামলায় বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম আজহারুল হক বলেন, অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০৪, ৩০৪ (ক) ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে পরোয়ানা তামিলের জন্য বলা হয়েছে।
মৃত্যুর শিকার ওই গৃহবধূ হচ্ছেন নোয়াখালীর সহকারি জেলা জজ মোরশেদুল আলমের স্ত্রী সায়মা শিকদার (২২)। সায়মা চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। তিনি নগরীর অক্সিজেন-কাপ্তাই লিংক রোডের নয়াহাট এলাকার এমদাদ উল্লাহর মেয়ে। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ সায়মা-মোরশেদ দম্পতির বিয়ে হয়।
মামলায় সায়মার মা সালমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ডা. কাজল রেখা রায়ের তত্ত্বাবধানে সায়মার প্রসূতিকালীন চিকিৎসা চলছিল। তার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল ২০ জুন। কিন্তু ২ জুন দিবাগত রাতে সায়মার প্রসব ব্যাথা উঠলে ডা. কাজল রেখা রায়কে ফোন করা হয়। তিনি সায়মাকে দ্রুত পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নিতে বলেন। রাত ১টার দিকে সায়মাকে পেশেন্ট কেয়ারে ভর্তির পর তাকে সিজার অপারেশন করার কথা বলেন চিকিৎসক। রাত ২টায় অপারেশন থিয়েটারে সায়মা ছেলে সন্তান জন্ম দেন। ৩ জুন সকাল পৌনে ৭টার দিকে তাকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মেট্রোপলিটনের চিকিৎসকেরা তার পরিবারকে জানান, রোগী সেখানে নেয়ার ঘণ্টাখানেক আগেই মারা গেছেন। চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে সায়মার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সায়মার মা।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ জুন, ২০১৬/ আফরোজ