সাভারে একটি পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসা নিজের দখলে নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীর মালবাহী ট্রাক ৬ দিন ধরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এদিকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানা পুলিশের সহায়তা চেয়েও কারখানার সামনে থেকে তার গুদামে ট্রাক নিয়ে আসতে পারেনি ওই ব্যবসায়ী।
তবে অভিযুক্ত আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির সরকার এ বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই কারখানার ঝুট ব্যবসা এখন আমার লোকজন করবে। আর এ কারণে ট্রাক আটকে রাখা হয়েছে। আশুলিয়া থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মঈনুল ইসলাম ভুইয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মোশারফ ইয়ারপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সাবেক সভাপতি। সে আশুলিয়া থানা যুবলীগেরও ১নং সদস্য। তবে বেশ কয়েক মাস ধরে যুবলীগের কোন দলীয় অনুষ্ঠানে তাকে ডেকেও পাওয়া যায় না। দলীয় কোন কার্যক্রমে তার কোন সাড়া নেই। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও মোশারফ ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। সে তার এলাকায় কয়েকটি কারখানায় ঝুট ব্যবসা করে। আর হলিউড কারখানাটি ধামসোনা ইউনিয়নে। এ কারণে ধামসোনা ইউনিয়নের যুবলীগের নেতাকর্মীরা ঝুটের ব্যবসা করবে বলে তিনি জানান।
ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন মুসা অভিযোগ করে বলেন, তিনি প্রায় সাত বছর ধরে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার উইন্ডো গ্রুপের একটি কারখানার সাথে ঝুট ব্যবসা করেন। গত শনিবার ওই কারখানা থেকে ঝটু ক্রয় করে নিয়ে আসার সময় যুবলীগ নেতা কবীর সরকার বাধা দেয়। এসময় তারা অবৈধভাবে কারখানার সামনে মাল ভর্তি ট্রাকটি আটকে দেয়। পরে তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় সাংসদকে অবহিত করেন। এছাড়াও আশুলিয়া থানায় বিষয়টি জানিয়েও কোন সহযোগীতা পায়নি। গত ৬ দিন ধরে যুবলীগ নেতা তার মালভর্তি ট্রাকটি আটকে রেখেছে।
ব্যবাসায়ী মোশারফ আরো অভিযোগ করে বলেন, তিনি ইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। গত কয়েক মাস আগে কবির সরকার নতুন থানা কমিটির আহ্বায়ক হওয়ার পর তাদের কমিটি ভেঙে দেয়। তিনি নতুন কমিটিতেও আশুলিয়া থানা যুবলীগের সদস্য। আর এখন তিনি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
উইন্ডো গ্রুপের হলিউড কারখানার জেনারেল ম্যানেজার ফজলুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে মোশারফ হোসেন তাদের কারখানার ঝুটের ব্যবসা করে আসছে। তবে কয়েকদিন আগে হঠাৎ করে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহŸায়ক কবির সরকার তার মুঠোফোনে ফোন দিয়ে বলেন, ধামসোনা ইউনিয়নে যুবলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন থেকে হলিউড কারখানার ঝুট ব্যবসা তার লোকজন করবে। এছাড়াও লুৎফর নামের একজন নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবি করে মোশারফকে ঝুট না দেওয়ার হুমকিও দেয়।
এব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শহি মিজান শাফিউর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে যুবলীগের যেই হোক না কেন পোশাক কারখানা নিয়ে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/১ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল