‘অভিজাত এলাকায় মাদকের হাট’ বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে সংসদে স্পিকারের দৃষ্টিতে আনেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ।
আজ সন্ধ্যায় পয়েন্ট অব অর্ডারে দাড়িয়ে তিনি বলেন, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় মাদকের ছড়াছড়ির কথা উল্লেখ করে বলেন, রমনায় ৭৪টি, লালবাগে ৯০টি, ওয়ারল্যাসে ১৫০টি, মিরপুরে ১২৫টি গুলশানে ১১২টি, উত্তরায় ৬৮টি, মতিঝিলে ১২২টি এবং তেজগাঁওয়ে শতাধিক স্পট রয়েছে।
কাজী ফিরোজ রশিদের বক্তব্য শেষ না হওয়ার আগেই সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে এমপিদের সোচ্চার হতে বলেন। তিনি বলেন, যেসব সংসদ সদস্য রয়েছে তারা সোচ্চার হোন। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিব। মাদকমুক্ত দেশ গড়ে তুলবো।
স্পিকারের উদ্দেশে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, কখনো এসব এলাকায় দিনের বেলা গেলে দেখবেন অনেক শিশুরা বিভিন্ন পন্থায় মাদক গ্রহণ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জুতার একটা বিশেষ কষ। এইটা পলিথিনের মধ্যে নিয়ে শিশুরা নেশা করে। ক্ষুধার যন্ত্রনায় এরা এসব করে। আমাদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যদি ঢাকা থেকে হাজার খানেক এমন শিশুকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আনসার ভিডিপিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দেখভালের জন্য দেন তাহলে এদের ভবিষ্যত ভাল হবে, শহরের অনাকাঙ্কিত পরিস্থিতিও দূর হবে, শহর পরিষ্কার থাকবে। কারণ এরাই ছিনতাই করে, শহর অপরিস্কার করে। এদের কারণে কারণে রাস্তায় চলা দায়।
স্পিকারকে উদ্দেশ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আপনি যদি হাইকোর্ট মাজার বা গুলিস্তানের গোলাপশাহর মাজারে কিংবা কমলাপুর স্টেশনে যান তাহলে দেখবেন, হাজার হাজার শিশুসহ অন্যদের পাবেন। এদের দেখবে কে। এরা তো আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ছে। কাউকে না কাউকে দেখতে তো হবে।
গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে পল্লী অঞ্চলে এখন ইয়াবা পাওয়া যায়। এই মাদক এতটা সহজলভ্য হয়ে গেছে। এই জন্য বার বার আপনি আমাকে নোটিশ দিতে বলেন। নোটিশ দিলে কী হবে। এখানে সবাই তো শুনে, ব্যবস্থা তো নিতে হবে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আছে তারা যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে কে নেবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি বলেছিলাম ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দিতে। যে আমরা আমার রাস্তায় কোনো মাদকসেবী শিশু দেখতে চাই না। সবার চোখের সামনে এগুলো করে, এসব পত্রিকায় আসে।
ফিরোজ রশীদ বক্তব্য দানকালে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাৎক্ষনিকভাবে কোথায় কোথায় এসব হয় আবার উল্লেখ করতে বলেন। তখন ফিরোজ রশীদ বলেন, হাইকোর্ট, কমলাপুর রেল স্টেশন, নয়া পল্টন এসব এলাকায় গেলে এই মুহুর্তে (আজ সন্ধ্যায় সাতটায়) কমপক্ষে ৫০০ মাদকসেবী পাওয়া যাবে। এছাড়া গুলিস্তানের পার্কেও এসব লোকজন পাওয়া যাবে। পার্কটির এখন উন্নয়ন কাজ চলছে।
এরপর সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্লোর নিয়ে বলেন, সংসদ সদস্য যেসব বিষয় বলেছেন সেগুলো আমি নোট নিয়ে রেখেছি। আজকেই (অভিযান) চালাব। কারণ আমরা চাইনা এসব ঘটুক। আমাদের সংসদ সদস্য যারা আছেন তাদেরকেও এলাকার দিকে একটু বিশেষ নজর দিতে হবে। যেখানে গার্ডিয়ান আছেন সেখানে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, যারা ভবঘুরে আছে তাদের বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ আছে, তাদেরকে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, দালাল শ্রেণির লোক থাকে যারা এইসব বাচ্ছাদের নিয়ন্ত্রণ করে। এরা অনেকটা ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু আমরাই পদক্ষেপ নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছি। এরা আও ব্যাপক ছিল। আর গুলশানসহ হাইফাই এলাকার লোকজন তারা কী করে তাদের বিষয়ে আমার কী করতে পারি। যারা গুলশানবাসী তারা যদি এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেন তাহলে ভাল হয়। তারপরও আমরা এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন