উদ্বেকজনকহারে বাড়ছে পরিত্যক্ত নবজাতক উদ্ধারের ঘটনা। পাঁচ বছরে এমন ঘটনা আড়াইশোরও বেশী। যার প্রকৃত ঘটনাই আড়ালে থেকে যায়। এসব ঘটনায় রহস্য উন্মোচিত না হওয়ায় পুলিশকেই দুষছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
কখনও ময়লার ভাগাড়ে, কখনও রাস্তার পাশে আবার হাসপাতালের টয়লেট থেকে পরিত্যক্ত নবজাতক উদ্ধারের খবর আসে গণমাধ্যমে। গেল সেপ্টেম্বরে এক মাসের ব্যবধানে কিশোরগঞ্জে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় দুই শিশু। এর আগে ১৫-ই মে ভাইরাল হয় ঢাকা শিশু হাসপাতালের টয়লেটে নবজাতক ফেলে রাখার ছবি।
ধানক্ষেত, ডাস্টবিন, ড্রেন বা রাস্তায় নবজাতক উদ্ধার কারই কাম্য নয়। এই ধরণের ঘটনায় যারা জড়িত বা অভিযুক্ত তাদের কাউকেই পুলিশ আজ পর্যন্ত খুঁজে বের করতে পারেনি। শিশু অধিকার ফোরামের হিসাবে, গত ৫ বছরে সারা দেশে পরিত্যক্ত মৃত নবজাতক মিলেছে ১৮১টি। আর জীবিত উদ্ধার হয় ৮২ জন। যাদের বেশিরভাগেরই বাবা-মার কোনো খোঁজ মেলেনি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার গণমাধ্যমকে বলেন, যে কোন কারণেই হোক কোন বাচ্চাকে যদি পরিত্যাক্ত অবস্থায় কেউ রেখে যান সেক্ষেত্রে পুলিশ তদন্ত করবেন, তাঁর যে লিগ্যাল গার্জেন তাঁকে খুঁজে বের করবেন, যদি তাদের অবহেলা থাকে, দোষ নিরুপণের জন্য তদন্ত করে যদি তাঁরা কিছু পায় তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধেও ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা দায়েরে কোন বাঁধা নেই।
মানবাধিকার কর্মীরা গণমাধ্যমকে জানান, এমন ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়লেও, তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। জাতীয় মানবিাধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এলিনা খান বলেন, একটা শিশু পাওয়া গেলে তাঁরা কোন রকম কাউকে দিতে পারলে বেঁচে যায়। আবার কেউ যদি মারা যায় তবে তাঁকে কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দাফন করা হয়। তাঁরা এটাকে একটা উটকো ঝামেলা মনে করে। তাঁরা ঝামেলা হিসেবে দেখে, মানবিক দিক থেকে এগুলো বিচার করা হয় না।
তবে পুলিশের দাবি, বাদী না থাকায়, এসব ঘটনায় তদন্তে অগ্রগতি হয় না। ডিএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, বাদী না থাকা, ভিক্টিম নবজাতক হওয়া বা কোন সাক্ষ্য প্রমান না পাওয়া প্রভৃতি কারণেই এই ধরণের কেসে প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন করা কষ্টসাধ্য। পরিচয়হীন সেইসব শিশুর শেষ আশ্রয়স্থল আজিমপুরের ছোটমনি নিবাস। পারিবারিক আবহাওয়া না পেলেও পরম মাতৃ স্নেহে বেড়ে উঠছে এইসব শিশু। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ভবিষতে সমাজের মূল স্রোতধারায় তাঁরা কতটা টিকতে পারবে। সূত্র : চ্যানেল টুয়েন্টিফোর।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক