রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সরকারি কর্মচারীদের তথ্য প্রতারক চক্রের হাতে

খুলনায় কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড কর্মকর্তা পরিচয়ে অনুদান দেওয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড কর্মকর্তা পরিচয়ে এক শ্রেণির প্রতারক খুলনায় সরকারি   চাকরিজীবী, শিক্ষক-চিকিৎসকদের কাছ থেকে  অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সময় চিকিৎসা ও শিক্ষাবৃত্তির জন্য যারা কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করেছিলেন, তাদের সব তথ্য চলে গেছে ওই প্রতারক চক্রের হাতে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, অনুদান দেওয়ার প্রলোভনে কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডে আবেদনে উল্লেখ করা সব তথ্য মোবাইল ফোনে জানানোর কথা বলে তাদের কাছ থেকে ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ নম্বর চাওয়া হচ্ছে। আর ক্রেডিট কার্ড বা বিকাশ নম্বর দিলেই কৌশলে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অর্থ।

গোবরচাকা ন্যাশনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কামরুন্নাহার শিরিন জানান, ৫ ও ৭ সেপ্টেম্বর কয়েক দফা মোবাইলে অনুদান দেওয়ার কথা বলে ক্রেডিট কার্ডের নম্বর চাওয়া হয়। ‘কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড কর্মকর্তা’ পরিচয় দিয়ে ২০১৮ সালের চিকিৎসা বাবদ আবেদনের তথ্য জানিয়ে আরও ২২ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া যাচ্ছে না বলে চক্রটি একটি ক্রেডিট কার্ডের নম্বর চায়। ক্রেডিট কার্ডের নম্বর দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই মোবাইলে ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) মেসেজ আসে। ওই নম্বরও তাকে জানালে ক্রেডিট কার্ড থেকে ‘পারসেস’ দেখিয়ে টাকা কেটে নেওয়া হয়। একইভাবে খুলনার কয়েকজন সরকারি চাকরিজীবী ও চিকিৎসক প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড চাকরিজীবীদের জন্য সাধারণ চিকিৎসা, জটিল ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসা, শিক্ষাবৃত্তি, যৌথবীমা ও দাফন/অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য অনুদান দিয়ে থাকে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, বোর্ডে দেওয়া গোপনীয় সব তথ্য এই প্রতারক চক্রের হাতে রয়েছে। কোন তারিখে কোন খাতে কত টাকার জন্য আবেদন করা হয়েছে, তার বিপরীতে কত টাকা দেওয়া হয়েছে, মোবাইল নম্বর, কর্মস্থল, ঠিকানা সবই প্রতারক চক্র সংগ্রহ করেছে। এসব তথ্য জানিয়ে বিভ্রান্ত করে চক্রটি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (খুলনা) মো. ফিরোজ শাহ জানান, প্রতিদিন এ রকম অসংখ্য অভিযোগ আসে। এ পর্যন্ত ৫০টির বেশি অভিযোগে থানায় মামলা ও জিডি হয়েছে। র‌্যাবের অভিযানে চক্রের কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। বোর্ডের পক্ষ থেকে সতর্ক করে নোটিস দেওয়া হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, বোর্ডের মঞ্জুরিকৃত অর্থ ও গ্রহীতার যাবতীয় তথ্য একসময় ওয়েবসাইটে দেওয়া হতো। প্রতারক চক্র সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। ওয়েবসাইট থেকে ব্যক্তিগত তথ্যাদি এখন সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম ফজলুজ্জোহা জানান, মঞ্জুরিকৃত অর্থ সেবাগ্রহীতাদের ব্যাংক হিসাবে দেওয়া হয়। অর্থ প্রেরণের ক্ষেত্রে ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদির অ্যাকাউন্ট নম্বর/পিন নম্বর প্রয়োজন পড়ে না। সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনসহ মোবাইল ফোনে গোপনীয় তথ্য প্রদান না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর