সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সময়মতো মেলে না ভিসেরা রিপোর্ট বরিশালে ফাইলবন্দি ৩০০ মামলা

তদন্তে অগ্রগতি নেই, নমুনা পচে যাওয়ার আশঙ্কা

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশালে হত্যা ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায়     দায়ের হওয়া ৩০০টি মামলার কার্যক্রম ফাইলবন্দি হয়ে আছে। গত ৬ মাস ধরে ঢাকার প্রধান  রাসায়নিক পরীক্ষাগার থেকে ময়নাতদন্তের ভিসেরা রিপোর্ট না আসায় সৃষ্টি হয়েছে এই অচলাবস্থার। দীর্ঘদিন ধরে মামলার আলামত পড়ে থাকায়   সেগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুত সরবরাহের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার।

বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে ঢাকার প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষাগার থেকে সব শেষে ভিসেরা রিপোর্ট এসেছিল গত ২৮ মার্চ। এরপর আর কোনো রিপোর্ট আসেনি ঢাকা থেকে।

মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত হত্যা, আত্মহত্যা ও অপমৃত্যুর ৩৬০টি ঘটনায় লাশের ময়নাতদন্ত   সম্পন্ন করে ভিসেরা রিপোর্টের জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে ঢাকার মহাখালী প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষাগারে। এর মধ্যে মহানগরীর ৭টি হত্যা ও ১৮০টি অপমৃত্যুর আলামত রয়েছে।

অথচ গত প্রায় ৬ মাসে ঢাকা থেকে ভিসেরা রিপোর্ট এসেছে মাত্র ৬০টি। সে হিসেবে প্রায় ৮৩ ভাগ ভিসেরা রিপোর্টের আলামত মাসের পর মাস পড়ে আছে প্রধান পরীক্ষাগারে।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসেরা নমুনায় দেওয়া প্রিজারভেটিভের একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। নির্দিষ্ট মেয়াদের পর ওই নমুনায় পচনের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মো. রেফায়েতুল হায়দার।

নমুনা পরীক্ষায় বিলম্ব হলে ক্ষেত্রবিশেষ ভিসেরা পরীক্ষায় উল্টো রিপোর্টও হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন।

আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট দিলীপ ঘোষ জানান, প্রতিটি হত্যা, আত্মহত্যা কিংবা অপমৃত্যুর ঘটনায় আইনগত প্রতিকার পেতে লাশের ময়নাতদন্ত প্রয়োজন হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক পর্ব হয়ে   থাকে স্থানীয় মর্গে। মরদেহের কিছু নমুনা ভিসেরা রিপোর্টের জন্য পাঠানো হয় ঢাকার প্রধান   রাসায়নিক পরীক্ষাগারে। ভিসেরা রিপোর্ট ও স্থানীয় মর্গের পরীক্ষা রিপোর্ট সমন্বয় করে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট করা হয়।  

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আজিমুল করিম জানান, দীর্ঘদিন ধরে লাশের ভিসেরা রিপোর্টে না আসায় সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো ফাইলবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। ভিসেরা রিপোর্টে বিলম্ব হওয়ায় সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, মামলার দীর্ঘ সূত্রতার কারণে বিচার প্রার্থীদের মাঝে আস্থা সংকটের সৃষ্টি হয়। হত্যা ও অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলার জট ও দীর্ঘসূত্রতা কমাতে দ্রুত ভিসেরা রিপোর্ট পেতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর