বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফের সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

ফের সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ

২০১৬ সালে খুলনার রূপসায় নদীর তলদেশ থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য মাছ কোম্পানিগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে ক্যাবলটি কাটা পড়ে। ওই বছরের মাঝামাঝি মেরামত করা হলেও ২০১৯ সালে দ্বিতীয় দফায় ক্যাবলটি কাটা পড়ে। এরপর প্রায় ২৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে দিঘলিয়ার চন্দনীমহল, আঠারবেঁকি নদী ও রূপসা হয়ে বিদ্যুৎ আনা হয় মাছ কোম্পানিগুলোতে। এতে গ্রাহকরা চাহিদামতো ভোল্টেজ না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। আবার দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ায় বিদ্যুতের লাইন লস বাড়তে থাকে।

সবশেষ ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) পরিচালনা পর্ষদের ২৫০তম বোর্ড সভায় আবারও সাবমেরিন ক্যাবলটি মেরামতের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে সঠিক স্থানে ক্যাবল স্থাপন হয়েছিল কি না- তা নিয়ে দুই দফায় ক্যাবলটি বিচ্ছিন্নের কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এর মধ্যে তদন্ত কমিটি কাজও শুরু করেছে।

ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু হাসান জানান, ৭০০ মিটার প্রশস্ত রূপসা নদীতে ৩৩ কেভি নতুন সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড সভা। গতকাল এ সংক্রান্ত চিঠি হাতে পেয়েছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে মেরামতের কাজ করতে বলা হয়েছে। এবার নদীর তলদেশে মাটির প্রায় ৩০ ফুট নিচ থেকে সাবমেরিন ক্যাবল নেওয়া হবে। এতে ব্যয় হবে ১২-১৩ কোটি টাকা। তিনি বলেন, রূপসায় শিপইয়ার্ড ও সিমেন্ট ফ্যাক্টরির পাশে বিদ্যুতের সাবস্টেশন থেকে সাবমেরিন ক্যাবল সরাসরি ওপাড়ে সাবস্টেশনে নেওয়া হয়েছে। এ স্থানে নদীর পানির গভীরতা ১২-১৪ ফুট। নতুন স্থাপনের সময় ক্যাবলটি নদীর তলদেশে বালুর ওপরে ছিল। নদীর দুই প্রান্তেই লাল পতাকা দিয়ে এ স্থানে জাহাজ বা কার্গো নোঙর করতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু অনেকে তা মানে না। ভাটার সময় পানি কমে যাওয়ায় এ স্থানে নোঙর করা জাহাজ বা কার্গোর চাপে ক্যাবলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  জানা যায়, প্রথমবার বরিশালে কীর্তনখোলা নদীতে ক্রসিংয়ের কাজে বেঁচে যাওয়া ক্যাবল দিয়ে এখানে সাবমেরিন ক্যাবল লাইন স্থাপন করা হয়। পরে ক্যাবল কাটা পড়লে মেরামত করা হয়। দুই দফায় স্থাপন ও মেরামত ব্যয় হয় প্রায় ২ কোটি টাকা।

ওজোপাডিকোর আরেক প্রধান প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সাবমেরিন ক্যাবল দিয়ে যুক্ত হওয়ায় ওই সময় রূপসার গ্রাহকরা ভালো ভোল্টেজ পাচ্ছিলেন। লাইন লসও কম ছিল। লবণচরা থেকে ৭০ মিটার দূরে রূপসা সাবস্টেশন হওয়ায় ভোগান্তি ছাড়াই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা গেছে। কিন্তু এখন ৩৩ কেভি লাইনে প্রায় ২৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে ওই স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে লাইন লস ও ভোগান্তি রয়েছে। নদীর তলদেশে সাবমেরিন লাইন থাকলে মেইনটেনেন্স ব্যয় থাকে না। এ কারণে পুনরায় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর