নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম বদলির তিন মাসেও দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। এদিকে নতুন অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদা ৫ মে যোগদানের পর থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছেন। সাবেক অধ্যক্ষ ডিডিও ক্ষমতা (আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা) হস্তান্তর না করায় তার স্বাক্ষরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান করা হচ্ছে। এতে একই প্রতিষ্ঠানে দুই অধ্যক্ষ বহাল রয়েছেন। জানা যায়, সাবেক অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, প্রশিক্ষণের কাঁচামাল ক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ, প্রশিক্ষণের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, নারী কেলেঙ্কারি ও পিডিও সম্মানী প্রদান না করাসহ বিভিন্ন কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার বদলির দাবিতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে টানা চার মাস আন্দোলন ও কর্মবিরতি পালন করেন। এর মধ্যে ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় প্রশিক্ষক মো. মারুফ আহমেদকে কুয়েট বাইপাসে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় তিনি অধ্যক্ষ বরকতুল ইসলামকে বিবাদী করে মামলা করেন। পরে মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ২৩ এপ্রিল বরকতুল ইসলামকে নাটোর টিটিসিতে বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি খুলনা টিসিসিতে স্বপদে বহাল থাকতে লবিং শুরু করেন। গত ১৮ জুলাই জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোবাইল ফোনে নতুন অধ্যক্ষ আতা হিয়া বিন খুদাকে তার পূর্বের কর্মস্থল সিরাজগঞ্জ কামারখন্দ টিটিসিতে ফিরে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। এটি জানাজানি হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে পুনরায় অসন্তোষ দেখা দেয়। তারা বলেন, ২১৪তম ব্যাচ থেকে ৩৭৮তম ব্যাচ পর্যন্ত প্রশিক্ষণার্থীদের টিউশন ফি বাবদ প্রায় ৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে সাবেক অধ্যক্ষ বরকতুল ইসলাম আত্মসাৎ করেন। এর বাইরে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি মন্ত্রণালয় তদন্ত করছে। তাকে দুই দফা কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়া হয়। এ অবস্থায় তিনি দুর্নীতি অনিয়ম ধামাচাপা দিতে পুনর্বহালের চেষ্টা করছেন। তাকে পুনরায় এ প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনলে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে। ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী ও মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।