চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সাদা বাঘই অন্যতম আকর্ষণ। যেন সাদা বাঘেই মুগ্ধ আগত দর্শনার্থীরা।
পক্ষান্তরে, মিনি কক্সবাজারখ্যাত পতেঙ্গা সুমদ্রসৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ে বিমোহিত হচ্ছেন। আপনজন এবং প্রিয়জনকে নিয়ে মুক্ত বাতাসে আলিঙ্গন করছেন। চিরচেনা নগর ছেড়ে সবাই যেন পতেঙ্গা প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকতে ভিড় জমিয়েছেন। ফলে এবার চট্টগ্রামের বিনোদনপ্রেমীরা চিড়িয়াখানার সাদা বাঘে মুগ্ধ, সঙ্গে বিমোহিত সাগরের ঢেউয়ে।
জানা যায়, এবারের ঈদে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। ঈদের দিন বিকাল থেকেই আবালবৃদ্ধবনিতাদের চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দেখা যায়। এর মধ্যে আছে- পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, পাঁচলাইশ জাতিসংঘ পার্ক, পতেঙ্গা বাটারফ্লাই পার্ক, পারকি সমুদ্রসৈকত, ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ড, শাহ আমানত সেতু, বায়েজিদ সংযোগ সড়ক, বাকলিয়ায় কর্ণফুলী নদীর তীর, নেভাল-২, কর্ণফুলী নদীর অভয় মিত্র ঘাট, হালিশহর সাগর পাড়, ফৌজদারহাট ডিসি পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ছিল দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড়।
কর্ণফুলী সেতুতে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী মুহাম্মদ মুনতাসির বলেন, ঈদের বন্ধে আত্মীয়ের বাসায় বেড়ানোর পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরাটাও একটা আনন্দ।
তাই আমরা দল ভিড়ে এখানে চলে আসছি। এখান থেকে বাকলিয়ায় কর্ণফুলী নদীর তীর ও নেভাল-২ তে ঘুরতে যাব।
ফয়’স লেক কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ঈদকে সামনে রেখে নতুন করে ছয়টি রাইড যুক্ত করা হয়েছে। ফলে দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে। টানা ছুটি হওয়ায় এবার অন্যবারের চেয়ে দর্শনার্থী বেশি।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা এখন ঈদের বিনোদনপ্রেমীদের প্রধান আকর্ষণ। ঈদের দিন থেকেই দর্শনার্থীদের চাপ। প্রতিদিন অন্তত গড়ে ২০-২৫ হাজারের বেশি মানুষ ঘুরতে আসেন। চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের বেশি আগ্রহ ছিল বাঘ, সিংহ, হরিণ, বানর নিয়ে। বিশেষ করে দুর্লভ সাদা বাঘই সবার আকর্ষণ। এসব প্রাণীর খাঁচার সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই ছিল। পশুপাখি দেখতে শিশু-কিশোরদের আগ্রহই বেশি চোখে পড়েছে।
জানা যায়, চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানায় আছে দুর্লভ সাদা বাঘ, সিংহ, মায়া হরিণ, বানর, হনুমান, জেব্রা ও বিভিন্ন প্রজাতির হরিণসহ অসংখ্য পশুপাখি। এখানে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে আসেন বয়স্করাও। চিড়িয়াখানার পশুপাখির পাশাপাশি পাহাড়ের মাঝখানে থাকা সিঁড়ি এবং শিশুদের রাইডগুলো বেশ উপভোগ্য।
অন্যদিকে, নগরের আছে ফয়’স লেক কমপ্লেক্স। সেখানেও ঈদের দিন থেকেই দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় এটির গুরুত্ব বেশি। সঙ্গে আছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে আঁকাবাঁকা লেক। লেকের দুই পাশে রয়েছে সারি সারি পাহাড় আর হরেক রকম গাছ-গাছালি। সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, ফেরিস হুইল, পাইরেট শিপ, কফিকাপ, রেড ড্রাইল্লাইড, ইয়োলো ড্রাই-স্লাইড, বাগ বইন্সসহ নানা রাইডে মেতেছেন তারা। তরুণদের পছন্দ ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ড। এখানে জলউৎসবে মেতে ওঠেন দর্শনার্থীরা। বেসক্যাম্পে আর্চারি, ক্লাইম্বিং ওয়াল, ট্রি টপ একটিভিটিতে মাতছেন সবাই। অন্যদিকে, নারী, শিশু, যুবক, বৃদ্ধ-সব বয়সি বিনোদনপ্রেমীরা ভিড় করছেন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে। কেউ সমুদ্রের নোনা পানিতে পা ভেজাচ্ছেন, কেউ স্পিডবোটে ছুটে বেড়াচ্ছেন, কেউ সূর্যাস্ত দেখার অপেক্ষায় সমুদ্রপাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছেন।