সাতক্ষীরা করোনা ডেডিকেটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও করোনার উপসর্গ নিয়ে ১৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে শ্বাসকষ্টে ৯ জন রোগী মারা যান। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অক্সিজেন সংকটে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
নতুন ১৪ জন মৃত ব্যক্তির মধ্যে চারজন করোনা আক্রান্ত ছিলেন। আর বাকি ১০ জন করোনা উপসর্গ জ্বর সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেছেন। একদিনে এটিই সাতক্ষীরায় মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড।
জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে ৭৪ জন মারা গেছেন। আর করোনা উপসর্গে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৫০ জনের। বর্তমানে সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮০৯ জন। এর মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৩৪ জন রোগী।
গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫২ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর সংক্রমণের হার ৪৯.০৫ শতাংশ। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাতক্ষীরা শহরের কুকরালি গ্রামের মো. আব্দুল হাসিব জানান, তার চাচি নাজমা খাতুন (৪৬) আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হাসপাতালের অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। অক্সিজেনের অভাবে তার চাচিসহ আশাশুনির আব্দুল হামিদ (৭৫), কালিগঞ্জ উপজেলার আকরাম হোসেন (৩৭), সদরের ইটাগাছার খায়রুন নেছাসহ তার চোখের সামনে একে একে শ্বাসকষ্টে ৯ জন মারা যান।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খোদা অক্সিজেন বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনে প্রেসার কমে যায়। এসময় কিছুটা অক্সিজেন সংকট তৈরি হলে চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রাতে অক্সিজেন প্লান্টে অক্সিজেন সরবরাহ করা হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
তবে কী কারণে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ ছিল সে ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন সহযোগী অধ্যাপককে প্রধান করে ৩ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই