এক সময় লিচু বলতে দিনাজপুরের লিচুকে বোঝানো হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে হাঁড়িভাঙা আমের পাশাপাশি লিচুতেও বাজিমাত করতে শুরু করেছেন রংপুরে চাষিরা। বর্তমানে রংপুরে বেশ কয়েক প্রজাতির লিচু পাওয়া যাচ্ছে। রংপুরে প্রায় ১০০ ব্যবসায়ী লিচু কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। সবচেয়ে বেশি লিচু বিক্রি হচ্ছে হাঁড়িয়া ও মাদ্রাজি প্রজাতির।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রংপুরে লিচুর আবাদ হয়েছে ৮২৭ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন হয়েছে ১০ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন। মোট উৎপাদন হয়েছে ৮ হাজার ৬৬ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ৩০০ কোটি টাকার। রংপুরে যে সব জাতের লিচু উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে হাঁড়িয়া, চায়না-২ চায়না-৩ ও মাদ্রাজি। তরে মাদ্রাজি ও হাঁড়িয়া লিচুর চাহিদা বেশি। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রংপুরে প্রতি বছর লিচুর উৎপাদন বাড়ছে। অনেকেই এখন আমের মতো লিচুর বাগান করে অর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। পাইকারি ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুস মিয়া বলেন, রংপুরের তারাগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রচুর লিচু আবাদ হয়। আমরা বাগান থেকে কিনে পাইকারি দরে বিক্রি করছি। প্রতি হাজার লিচু আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, দিনাজপুরের লিচু এখনো আসতে শুরু করেনি। দিনাজপুরের লিছু বাজারে ওঠার আগে রংপুরের লিচু যথেষ্ট বিক্রি হচ্ছে। বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়ার স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ কমির মুন্না বলেন, বাজারে লাল টুকটুকে লিচু কিনতে গিয়ে ঠকছেন অনেকে। তবে কেনার আগে ভালো করে তার গায়ের রং দেখে নিতে হবে। ভালো লিচু শুধু টুকটুকে লাল হয় না। সবুজ ও লাল রঙের মিশেলের লিচু অনেক বেশি সুস্বাদু।
অনেকে রং ব্যবহার করে লিচুকে টকটকে লাল করে তোলেন। তাই কেনার আগে লিচুর রং পরীক্ষা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। রংপুর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক এবং বায়োক্যামিস্ট ডা. মোস্তারী বেগম মিতা জানান, লিচুর এই ভরা মৌসুমে শিশুরা যাতে অসাবধানতাবশত একা একা খেতে গিয়ে বিচি গলায় আটকিয়ে না ফেলে এ বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি। অতিরিক্ত লিচু খেলে হাইপোগ্লাইসোমিয়া হয়। অপুষ্টিতে ভোগা শিশু বিশেষ করে খালি পেটে খেলে ব্লাড সুগার লেভেল কমে যায়।