জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, এইচ এম এরশাদকে স্বৈরাচার বলা হতো। কিন্তু ৫ আগস্টের পর স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগকে বলা হয় এক নম্বর স্বৈরাচারী দল। তিনি বলেন, সময়ের পরিবর্তনে আরও অনেক দলকে স্বৈরাচার বলা হবে। এইচ এম এরশাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় পল্লীবন্ধু এরশাদ স্মৃতি সংসদ আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো- চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এ সভার আয়োজন করা হয়। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘সব সরকারই সংস্কার করতে চায়, একই সঙ্গে সব সরকার ভালো কাজ করতে চায়। কিন্তু নানান বাধার কারণে সবকিছু করা যায় না। এরশাদ সাহেব যে সংস্কার করে গেছেন, তা কোনো সরকার করতে পারেনি। আমাকে বলা হয় আমি জাতীয় পার্টি ভেঙেছি। কিন্তু আমি দল ভাঙিনি। দল আমাকে বের করে দিয়েছে। আমার নেতৃত্বে আন্দোলন করে আমি এরশাদকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছিলাম। আমি সব সময় বলে এসেছি ঐক্যের কথা। আজ এরশাদ সাহেবের স্মরণসভায় এসে বৃহত্তর ঐক্যের যে কথা শুনছি, তা যদি বাস্তবে কার্যকর করা যায়, তাহলে দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবে।’ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা যেজন্য জীবন দিয়েছে, সে স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি। দেশে আজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। সাধারণ মানুষ চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। এ অস্থির সময়ে দেশ ও দেশের মানুষের প্রয়োজনে জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে।’কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি নয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। বিভিন্ন সময়ে আমরা সংসদে ছিলাম। আমাদের পথচলায় অনেক ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। আমাদের ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাই। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় আমরা শামিল হতে চাই।’ রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আসুন আমরা শেষ জীবনে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করি। দেশে আবারও পরিবর্তন আসবে। আমরা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করে যাব।’ এরশাদ জমানার নানান উন্নয়ন তুলে ধরেন তিনি। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের পর দেশের পারিবারিক রাজনৈতিক কবর রচনা হয়েছে। এখন স্বামী-স্ত্রীর কথায় রাজনৈতিক দল পরিচালিত হবে না। পরিচালিত হবে গণতান্ত্রিক উপায়ে, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে; যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমে।’