নতুন এক বৈজ্ঞানিক প্রকল্পে পৃথিবীর ইতিহাসে পরিচিত সবচেয়ে লম্বা পাখিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ‘কোলসাল বায়োসায়েন্সেস’। প্রজাতিটির নাম দক্ষিণ দ্বীপের জায়ান্ট মোয়া (South Island Giant Moa)।
এই বিশাল আকৃতির পাখিটির উচ্চতা ছিল প্রায় ১২ ফুট (তিন মিটার)। প্রায় ৬০০ বছর আগে নিউজিল্যান্ডে প্রাচীন পলিনেশিয়ানদের আগমনের একশো বছরের মধ্যেই এটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
কোলসাল বায়োসায়েন্সেস জানিয়েছে, তারা আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে এই বিলুপ্ত পাখিটিকে জিন প্রযুক্তির মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করতে চায়। এ প্রকল্পে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের ক্যানটারবুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নগাই তাহু রিসার্চ সেন্টার’।
এই প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ চলচ্চিত্র নির্মাতা স্যার পিটার জ্যাকসন। তিনি বলেন, ‘যদি সত্যিই মোয়াকে ফিরে পাওয়া যায়, তবে তা আমার তৈরি করা যেকোনো চলচ্চিত্রের চেয়ে বেশি আনন্দ ও তৃপ্তি দেবে।’
মোয়া ছিল এক ধরনের ডানা ও পাখনা-বিহীন পাখি। পাখিটি উড়তে পারতো না। এটি সম্পূর্ণভাবে ভূমিতে চলাফেরা করত এবং আকারে ছিল বিশাল। গবেষকরা এটিকে ‘অ্যাভিয়ান ডাইনোসর’ অর্থাৎ পাখির মতো ডাইনোসর বলেও উল্লেখ করছেন।
এর আগে, কোলসাল বায়োসায়েন্সেস ১২ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত ‘ডায়ার উলফ’ প্রজাতিকে পুনরায় জীবিত করার দাবি করে আলোচনায় আসে। সে সময় তারা জিন সম্পাদনার মাধ্যমে আধুনিক গ্রে উলফ ও বিলুপ্ত ডায়ার উলফের DNA মিলিয়ে একধরনের নতুন প্রজাতির জন্ম দেয়, যা ওজনে সাধারণ নেকড়ের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ ভারী এবং দেখতে প্রাচীন উলফের মতোই।
এই উদ্যোগ যদি সফল হয়, তবে এটি শুধু একটি বিলুপ্ত প্রজাতির পুনর্জন্ম নয়, বরং প্রকৃতি ও ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনার দিকেও এক নতুন দৃষ্টান্ত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল