বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিগত দেড় যুগ বিদেশে থাকলেও তিনি পরিপক্ব রাজনীতিক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তার রাজনৈতিক বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আত্মবিশ্বাস নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করছে। যে কোনো সময় তিনি দেশে ফিরবেন। তাকে বরণ করার জন্য বিএনপির লাখ লাখ নেতা-কর্মী ও দেশবাসী প্রস্তুত। এমন প্রেক্ষাপটে তিনি যখন দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিক তখনই তাকে টার্গেট করা হচ্ছে। সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের যে প্রক্রিয়া চলছে তা থামাতে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা সোহাগ হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি মহল তারেক রহমানের চরিত্র হননের দুঃসাহস দেখিয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে বিএনপির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চলছে। সেই চক্রান্তের একমাত্র লক্ষ্য হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা-যা খুব কম রাজনীতিবিদের মধ্যে আছে। তারেক রহমান নিঃসন্দেহে আমাদের স্বপ্ন, আমাদের ভবিষ্যৎ। দেশের মানুষের আস্থার জায়গায় রয়েছেন।
নেতাদের অভিমত, এখন তারেক রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে একটি মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। রাজনৈতিকভাবে ভোটের মাধ্যমে তাকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ার ভয়ে অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলো তার বিরুদ্ধে সক্রিয়। তারেক রহমানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে সেই অপশক্তিগুলো। দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের প্রক্রিয়া থামাতেই এই ষড়যন্ত্র। নেতারা মনে করেন, দেশে যখনই স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, চক্রান্তকারীরা তারেক রহমানের জনপ্রিয়তাকে লক্ষ্যবস্তু করে তোলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তারা সক্রিয়। ছদ্মবেশে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ ও তাদের অনুগত দেশি-বিদেশি অপশক্তি। চলমান পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে অগণতান্ত্রিক অপশক্তিকে সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন চাইলে সব ধরনের সহযোগিতাও করবে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত দেশকে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ফেরাতে চায়। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও মব সৃষ্টির অপচেষ্টার প্রতিবাদসহ নানা দাবিতে মাঠে নেমেছে বিএনপির তিন অঙ্গসহযোগী সংগঠন-যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।
নেতারা বলেন, ‘মব সন্ত্রাস’ করে যারা অরাজকতা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় সামাজিক শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে। সার্বিকভাবে সাধারণ মানুষের জন্য একটা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অকার্যকর মনে হচ্ছে। এটি কোনো অপশক্তিকে ষড়যন্ত্রের সুযোগ করে দেওয়ার অংশ কি না-সে ব্যাপারেও প্রশ্ন উঠছে জনমনে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশ ও জণগণের স্বার্থে বড় দল হিসেবে বিএনপি এই পরিস্থিতির উন্নতি চায়, এর সুরাহা চায়।
বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক বলেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ স্লোগানে দেশ পুনর্গঠনের তারেক রহমানের স্বপ্নই তার এবং তার দলের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অন্যতম প্রধান কারণ। হীনমন্যতা ও ঈর্ষা থেকে কিছু দল ও গোষ্ঠী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। যা অপরাজনীতি ছাড়া কিছু নয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির প্রতি জনগণের সমর্থন ক্ষুণ্ন করার জন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে এবং তাতে যুক্ত হয়েছে কয়েকটি ইসলামি দল। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের ভিতর ও বাহির থেকে গভীর চক্রান্ত চলছে এবং টার্গেট করা হয়েছে তারেক রহমানকে। তিনি বলেন, তারেক রহমান কোনো অপরাধীকে প্রশ্রয় দেননি, এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছেন।