ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে চলেছে। চলছে নির্বাচনি কেনাকাটা। প্রস্তুতি চলছে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করার। এ ছাড়া ভোট সামনে রেখে কয়েক মাস আগে দেওয়া কার্যাদেশের ভিত্তিতে অন্তত ছয়টি সামগ্রী ধাপে ধাপে আনা হচ্ছে নির্বাচন ভবনে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সেসব সংরক্ষণ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার কয়েকটি চালান এসেছে, রবিবারও কিছু সামগ্রী আনা হয়েছে।
অন্যদিকে সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ইসির ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, এ সংলাপ এক থেকে দেড় মাস সময়ের মধ্যে কয়েকটি ধাপে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। রাজনৈতিক দল, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের এই সংলাপে ডাকা হবে।
এদিকে লালগালা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক, অফিশিয়াল সিল, মার্কিং সিল, বড় হোসিয়ান ব্যাগ, ছোট হোসিয়ান ব্যাগ সামগ্রীর চাহিদার কিছু অংশ সরববাহ শুরু হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বড় ও ছোট হোসিয়ান ব্যাগ চাহিদার সবগুলোই পৌঁছে গেছে। ধাপে ধাপে অন্যগুলোও আসছে। এবার ভোটার সংখ্যা হতে পারে প্রায় পৌনে ১৩ কোটি। সে হিসাবে প্রায় ৪৫ হাজার ভোট কেন্দ্র এবং ২ লাখের বেশি ভোটকক্ষ প্রয়োজন হতে পারে। এরই মধ্যে কেনাকাটা ও সরবরাহ শুরু হওয়া আট ধরনের মালামালের মধ্যে রয়েছে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লাল গালা ২৩ হাজার কেজি চাহিদা; এক চতুর্থাংশ পৌঁছে গেছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ৫০ লাখ লক চাহিদা; ৫ লাখ সরবরাহ শুরু। ৮ লাখ ৪০ হাজার দাপ্তরিক সিল চাহিদা; ৫ লাখ সেপ্টেম্বরের শুরুতে সরবরাহ। মার্কিং সিল ১৭ লাখ ৫০ হাজার চাহিদা বিপরীতে দেড় লাখ সরবরাহ শুরু। ব্রাস সিল ১ লাখ ১৫ হাজার চাহিদা; রিটেন্ডার হওয়ায় বিলম্ব। ১ লাখ ১৫ হাজার গানি ব্যাগ; রিটেন্ডার হওয়ায় সরবরাহ শুরু হয়নি। ৭০ হাজার বড় হোসিয়ান ব্যাগ চাহিদার সব সরবরাহ। ১ লাখ ১৫ হাজার ছোট হোসিয়ান ব্যাগ; চাহিদার সব সরবরাহ হয়ে গেছে।
সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরে আগস্টের শুরুতে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেছিলেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা শেষ হবে। লোকাল পারসেজ প্রকিউরমেন্টে আটটি সামগ্রী ছিল। তার ভিতরে একটিতে পুনরায় দরপত্র দিতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সময়সীমা রয়েছে, তার মধ্যে পাওয়া যাবে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটের সামগ্রীর অধিকাংশই নির্বাচন কমিশন থেকে সরবরাহ করা হয়। কিছু মনোহরি জিনিস রিটার্নিং অফিসারকে স্থানীয়ভাবে সংগ্রহও করতে হয়। ভোট সামনে রেখে সুঁই সুতা, দিয়াশলাই, আঠা ও কলম থেকে প্লাস্টিকের পাত- প্রতিটি কেন্দ্র ও বুথেরে জন্য এমন ২১ ধরনের জিনিস লাগে। আসনভিত্তিক ভোটার, ভোট কেন্দ্র ও সামগ্রিক প্রস্তুতি শেষ হলে তফসিল ঘোষণার পর আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা অফিসে ধাপে ধাপে তা বিতরণে যাবে। ব্যালট পেপারসহ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভোটের আগেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হয় সব সরঞ্জাম।