গমের ব্লাস্ট রোগের টেকসই ও পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ কর্মশালা গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৪ জুলাই) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ কর্মশালার মূল প্রতিপাদ্য ছিল- "ব্যাসিলাস ভিত্তিক বালাইনাশক প্রস্তুতি ও ব্যবহার"।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন গাকৃবির উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. জহুরুল করিম। সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক এবং আইবিজিই এর সাবেক পরিচালক প্রফেসর ড. তোফাজ্জল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইবিজিই'র পরিচালক প্রফেসর ড. শাহ্ মোহাম্মদ নাঈমুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের কো-পিআই ও আইবিজিই এর সহযোগী অধ্যাপক ড. দিপালী রাণী গুপ্তা।
কর্মশালায় আইকিউএসি'র পরিচালক প্রফেসর ড. নাসরীন আক্তার আইভী, প্রফেসর ড. মো. মোর্শেদুর রহমান, আইবিজিই'র সাবেক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমানসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, আইবিজিই'র শিক্ষার্থী, বিএআরআই ও ব্রি’র বিজ্ঞানী ও বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালার অন্যতম আয়োজক ড. তোফাজ্জল ইসলাম, কর্মশালার প্রধান লক্ষ্য ছিল গমের ব্লাস্টের মতো ধ্বংসাত্মক ছত্রাকজনিত রোগ মোকাবিলায় রাসায়নিকের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব বালাইনাশক উৎপাদন ও ফর্মুলেশনের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা। অংশগ্রহণকারীরা ব্যাসিলাস নামক উপকারী ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে জৈব বালাইনাশক তৈরি ও মাঠ পর্যায়ে তার প্রয়োগ সম্পর্কে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ লাভ করেন।
তিনি বলেন, এই প্রশিক্ষণে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা ভবিষ্যতে গম উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংইয়ের (আইবিজিই) উদ্দ্যোগে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি ও ইউএসডিএ এর অর্থায়নে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সেলের (আইকিউএসি) সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গমের ব্লাস্ট একটি ভয়াবহ রোগ যা প্রতিবছর ফসলের বিপুল ক্ষতি করে। রাসায়নিকের বিকল্প হিসেবে ব্যাসিলাস-ভিত্তিক জৈব প্রযুক্তি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব সমাধান হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষ অতিথি ড. জহুরুল করিম বলেন, কৃষক পর্যায়ে জৈব বালাইনাশক তৈরির দক্ষতা পৌঁছে দিতে পারলে গম চাষে একটি টেকসই পরিবর্তন আসবে। আমাদের লক্ষ্য কৃষকের জন্য বাস্তবসম্মত ও উপযোগী সমাধান নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, অণুজীবের শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করলেও বাংলাদেশ সহ উন্নয়নশীল দেশসমূহ এক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য অণুজীবভিত্তিক বায়োফার্টিলাইজার ও বায়োপেস্টিসাইড বাণিজ্যিকীকরণ সহজতর করার জন্য দেশে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন করা জরুরি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ