ইউরোপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ হুমকির মুখে রয়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, ইউরোপের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা বর্তমানে এমন এক সংকটে পড়েছে, যা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছি। বৈশ্বিক রাজনীতি এখন অত্যন্ত জটিল ও অনিশ্চয়তায় পূর্ণ। খবর বিবিসির।
প্যারিসে ফরাসি সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশে দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে তিনি একথা বলেন। ম্যাক্রোঁ জানান, ফ্রান্স সামরিক খাতে ব্যয় ব্যাপকভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বছর থেকে প্রতিরক্ষা বাজেটে ৩.৫ বিলিয়ন ইউরো যুক্ত করা হবে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে আরও ৩ বিলিয়ন ইউরো বাড়ানো হবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের তিন বছর আগেই ফ্রান্সের সামরিক বাজেট দ্বিগুণ করা হবে।
বিবিসি জানায়, ২০১৭ সালে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৩২ বিলিয়ন ইউরো। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে তা বাড়িয়ে ৬৪ বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত করা হবে। তবে এই বাজেট বৃদ্ধির প্রস্তাব এখনো ফরাসি পার্লামেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বাস্তিল দিবসের আগের দিন দেওয়া এই বক্তব্যে ম্যাক্রোঁ বলেন, এই পৃথিবীতে স্বাধীন থাকতে হলে, ভয় দেখাতে হয়। আর ভয় দেখাতে হলে শক্তিশালী হতে হয়।
তিনি রাশিয়ার আগ্রাসনকে “সাম্রাজ্যবাদী নীতি” বলে অভিহিত করেন এবং ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। ম্যাক্রোঁ বলেন, আজকের পৃথিবী আবারও পারমাণবিক শক্তির প্রতিযোগিতা ও বৃহৎ সংঘাতের দিকে ফিরে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যরা সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রতিরক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ ব্যয় করা হবে, যা পূর্বে ছিল ২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যও তাদের প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা শুরু করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি জানিয়েছেন, এটি মস্কোতে একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠাবে।
ফরাসি সেনাবাহিনী প্রধান থিয়েরি বারকার্ডও সতর্ক করে বলেন, রাশিয়া ফ্রান্সকে ইউরোপে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করে। ইউক্রেনে এখন যা ঘটছে, তার মাধ্যমেই ইউরোপের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ