ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি আবারও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেন, “আমি পুতিনের উপর হতাশ এবং তার প্রতি বিরক্তি বাড়ছে। তিনি অনেককে অবাক করেছে। মুখে ভালো কথা বলে, তারপর সন্ধ্যায় সবার ওপর বোমা ফেলছে।”
সেই সঙ্গে ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রদান ও রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি রুশ নেতার সঙ্গে কাজ করে যুদ্ধ শেষ করতে পারেন। তিনি তখন ইউরোপীয় মিত্রদের মতো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কঠোর করেননি। কিন্তু মাসের পর মাস ধরে ইউক্রেনের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। সম্প্রতি ট্রাম্প বারবার পুতিনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং রবিবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, হয়তো তিনি এবার নিষেধাজ্ঞা কঠোর করতে যাচ্ছেন, যেটা কংগ্রেসে একটি প্রতিরোধমূলক প্যাকেজ হিসেবে জোর পাচ্ছে।
তিনি বলেছেন, “আমরা ওদের প্যাট্রিয়ট দেবো, যেটা ওদের খুব দরকার।”
নিউ জার্সিতে ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনাল দেখে অ্যানড্রুজ সামরিক ঘাঁটিতে ফেরার সময় ট্রাম্প বলেন, “আমি এখনও সংখ্যা নির্ধারণ করিনি (কী পরিমাণ অস্ত্র দেব)। তবে কিছু তো ওরা পাচ্ছেই। কারণ ওদের সুরক্ষা দরকার।”
এর আগে হোয়াইট হাউস ঘোষণা দেয় যে, তারা ইউক্রেনকে কিছু অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত রাখবে। কিন্তু এখন নতুন একটি চুক্তির আওতায় ন্যাটো যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো কিছু অস্ত্রের জন্য অর্থ দেবে।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা ওদের বিভিন্ন আধুনিক সামরিক উপকরণ পাঠাব এবং ওরা আমাদের শতভাগ অর্থ দেবে। এটা আমাদের জন্য ব্যবসার বিষয় হবে।”
এ সপ্তাহের শুরুতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, তারা নতুন প্যাট্রিয়ট ব্যবস্থা ও ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়ার বিষয়ে বহুস্তর চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছেন।
ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করবেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, কাল কী হবে দেখা যাক, ঠিক আছে? পাশাপাশি আবারও বলেন, তিনি (মার্ক) রুটের সঙ্গে কথা বলবেন। রবিবারের আগে মার্কিন সিনেটররা দুই দলীয় একটি বিল প্রচার করেন। তাতে ট্রাম্পকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘স্লেজহ্যামার’ জাতীয় নিষেধাজ্ঞার ক্ষমতা দেওয়া হবে।
রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, এই বিল ট্রাম্পকে পুতিনের অর্থনীতি এবং তার যুদ্ধযন্ত্রকে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ দেবে। এতে ট্রাম্প যেকোনও দেশ, যারা রাশিয়াকে সাহায্য করে, তাদের ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক বসাতে পারবেন। গ্রাহাম বলেন, এসব দেশ হতে পারে চীন, ভারত বা ব্রাজিল, যারা রুশ পণ্য কিনছে। এটি সত্যিকার অর্থেই একটি স্লেজহ্যামার, যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে থাকবে যুদ্ধ শেষ করার জন্য।
প্রস্তাবিত বিল সম্পর্কে জেলেনস্কি এক্স পোস্টে বলেন, নিঃসন্দেহে এটিই সেই চাপ যা শান্তি আনতে পারে এবং কূটনীতি যাতে অর্থহীন না হয় তা নিশ্চিত করতে পারে। লিন্ডসে গ্রাহাম ও ডেমোক্রেট সিনেটর রিচার্ড ব্লুমেনথাল সোমবার রাতে ন্যাটোর মহাপরিচালক মার্ক রুটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা।
ব্লুমেনথাল বলেন, তারা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে জমাকৃত রুশ সম্পদ ইউক্রেনের জন্য উন্মুক্ত করার বিষয়ে আইনি জটিলতা নিয়ে আলোচনাও করবেন। যুক্তরাষ্ট্রে যে ৫ বিলিয়ন ডলার জমা রয়েছে, সেটাও ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি মনে করি, এখনই সময়। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস, আল-জাজিরা, ইউএসএ টুডে
বিডি প্রতিদিন/একেএ