রাজধানীর পল্লবীতে ৫ কোটি টাকার চাঁদা না পেয়ে এ কে বিল্ডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা ও গুলির ঘটনায় আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এর আগে রবিবার তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল ৮। গ্রেপ্তার পাঁচ ব্যক্তি হলেন আব্বাস (২৯), ইয়ামিন (২৭), সোহেল (২৩), মাজহারুল (৩০) ও চাঁদ মিয়া (২২)। র্যাব বলছে, জামিলের প্ররোচনায় তারা হামলায় অংশ নেয়।
গতকাল র্যাব-৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপস) কে এন রায় নিয়তি জানান, গত ১১ জুলাই পল্লবীর আলব্দির টেকে এ কে বিল্ডার্স নামে আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে ৫ কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে একদল লোক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা এ সময় চারটি গুলিও ছোড়ে। গুলিতে শরিফুল ইসলাম নামে প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা আহত হন। তিনি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়। র্যাব জানায়, মামলার পরই র্যাব-৪ এর একটি দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা র্যাবকে জানায়, জামিল নামে একজনের প্ররোচনায় এ ঘটনায় অংশ নেন তারা। আর গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সোহেলের (২৩) বিরুদ্ধে তিনটি, আব্বাসের (২৯) বিরুদ্ধে চারটি এবং চাঁদ মিয়ার (২২) বিরুদ্ধে তিনটি মাদক, হত্যা, ডাকাতি মামলা রয়েছে। এর আগে রবিবার পল্লবী থানা পুলিশ নিলয় হোসেন বাপ্পী, মামুন মোল্লা ও মোহাম্মদ রায়হান নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এদিকে এ কে বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান কাইউম আলী খানের ছেলে আমিনুল এহসান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রায় তিন সপ্তাহ আগে জামিল নামের এক ব্যক্তি তার বাবার কাছে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় জামিল তার লোকজন নিয়ে দুই দফায় তাদের প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে সিসি ক্যামেরাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যায়। শুক্রবারও ২৫-৩০ জন হামলা ও গুলি চালায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিরপুর এবং পল্লবী এলাকার জামিল বাহিনীর প্রধান মুজিবুর রহমার ওরফে জামিল। তাকে ২০০৯ সালের ৮ জুন র্যাব গ্রেপ্তার করেছিল। সে সময় তার দুই সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চারটি বিদেশি পিস্তল ও রিভলবার জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার সহযোগীরা ছিলেন খোরশেদ ও হালিম। তখন র্যাব জানিয়েছিল, জামিলরা তিন ভাই। তার অন্য দুই ভাইও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত। জামিল সবার বড়। সাবেক এমপি আহসানুল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মশু জামিলের ছোট ভাই। মেজো ভাই মামুনও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। ২০০৫ সালের ৫ এপ্রিল র্যাবের হাতে জামিল আরও একবার গ্রেপ্তার হয়েছিল। পরে জামিনে মুক্তি পায়। তখন জামিলের বিরুদ্ধে চারটি হত্যাসহ ২২টি মামলা ছিল। একাধিক থানায় অসংখ্য সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জামিলের মূল কাজ টেলিফোনে চাঁদাবাজি করা। চাঁদা না পেলে গুলি করে বা বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং প্রয়োজনে হত্যাও করে থাকে।