ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি কায়া ক্যালাস বলেছেন, গাজায় বর্তমান পরিস্থিতি ‘সহ্যসীমার বাইরে’ চলে গেছে। বুধবার এ কথা বলেন তিনি।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘প্রয়োজনের চেয়েও বেশি মাত্রায়’ হামলা চালানোর অভিযোগ আনেন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ‘অসম শক্তি প্রয়োগ’-এর নিন্দা জানিয়ে ক্যালাস বলেন, যুদ্ধবিরতিতে ফিরে যেতে হবে, যাতে জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত হয় এবং আলোচনার মাধ্যমে একটি টেকসই শান্তির পথ তৈরি হয়।
ইইউর বৈদেশিক কর্মপরিষেবা ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান, অসম বলপ্রয়োগ এবং বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।’ তিনি আরও বলেন, বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর অব্যাহত হামলা ‘অসমর্থনযোগ্য’।
মানবিক সহায়তাকে কখনোই ‘রাজনীতিকীকরণ’ বা ‘সামরিকীকরণ’ করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করে ক্যালাস জাতিসংঘের সহায়তা পৌঁছানোর ভূমিকাকে গুরুত্ব দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা পুনরায় জোরালোভাবে আহ্বান জানাচ্ছি—গাজার বেসামরিক জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা দ্রুত, বাধাহীন ও টেকসইভাবে চালু করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী ইসরায়েলিদের সহিংসতা বেড়ে গেছে, যেখানে ‘ভীতিকর অভিযান, শারীরিক ও মৌখিক আক্রমণ, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগের’ মতো ঘটনার ফলে পুরো ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলকে অবিলম্বে এই ইস্যুতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’
এ ছাড়া পূর্ব জেরুজালেমের পুরোনো শহরে ‘জেরুজালেম দিবস’-এ ডানপন্থি ইসরায়েলি কর্মীদের মিছিলের সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা, স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর ঘটনাও তীব্রভাবে নিন্দা করেন ক্যালাস।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘রাজনীতিকদের এমন উসকানিমূলক আচরণ জেরুজালেম ও এর পুরোনো শহরের বিশেষ মর্যাদা ও চরিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার পর ইসরাইল গাজায় স্থল ও বিমান অভিযান শুরু করে। ওই হামলায় হামাসের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা প্রায় ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে বলে তেল আবিবের দাবি। এর জবাবে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংস হয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এসব হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৫৬ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছে এক লাখ ২৩ হাজার ১২৯ জন।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম