বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে দেশের ছয় বিভাগে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপ আরও ঘনীভূত হতে পারে। এর প্রভাবে (গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায়) ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এদিকে লঘুচাপের প্রভাবে বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে করে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলের অনেক জনপদে পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। সূত্র জানায়, অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও কক্সবাজার জেলার পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টির ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারী, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারী এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।
মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয়, যা পরে আরও ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলেও আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিপৎসীমার ওপরে দক্ষিণাঞ্চলের ছয় নদীর পানি : উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপের প্রভাবে বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে করে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলের অনেক জনপদ পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল বিকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের জল অনুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর ১২টি পয়েন্টের মধ্যে ছয়টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি। এর মধ্যে বিষখালী নদীর পানি বরগুনা সদর উপজেলা পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলা পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার, বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলায় মেঘনা নদীর তজুমদ্দিন উপজেলা পয়েন্টে ৬৭ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর সদর উপজেলার বলেশ্বর নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার, উমেদপুর পয়েন্টে কঁচা নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে ভোলা খেয়াঘাট এলাকায় তেঁতুলিয়া নদী, বরিশালের কীর্তনখোলা, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা পয়েন্টে পায়রা এবং বরগুনার আমতলী উপজেলা পয়েন্টে বুড়িশ্বর নদীর পানিও বাড়ছে। তাজুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের নদনদীর পানি বৃদ্ধি পায়। আশা করা যাচ্ছে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে পানি স্বাভাবিক স্তরে চলে আসবে। পানি বৃদ্ধিতে বেড়িবাঁধ, মাছের ঘের, ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করেন তিনি।