রাজশাহীর টিবিপুকুর এলাকায় প্রায় ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল। ২০২৩ সালে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। কিন্তু সরকার জনবল নিয়োগ না দেওয়ায় হাসপাতালটি আর চালু হয়নি। ঠিকাদারের কাছ থেকে গণপূর্ত ও সিভিল সার্জন অফিস কেউ বুঝে নেয়নি হাসপাতালটি। এরই মধ্যে ওই হাসপাতালের আসবাবপত্র কেনার জন্য ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। তবে আমি আসার আগেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে জনবল নিয়োগের বা হাসপাতালটি কীভাবে চালু হবে সে নিয়ে কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি। এ কারণে আমরা ভবনটি বুঝে নিতে পারছি না। তবে আসবাবপত্র কেনার জন্য ৮ কোটি টাকার একটি বরাদ্দ চলতি মাসেই হয়েছে।’ হাসপাতাল চালু না হলেও অর্থ বরাদ্দ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তার কাছ থেকে এমন কোনো বরাদ্দ চেয়ে চিঠি গেছে।’
প্রায় ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ ২০১৬ সালে শুরু হয়ে শেষ হয় ২০২৩ সালে। কিন্তু ব্যবহার না হওয়া ভবনের রংও উঠতে শুরু করেছে। লাগানো এসিগুলো দুই বছর ধরে ব্যবহৃত না হওয়ায় নষ্ট হতে বসেছে। কক্ষে পড়ে আছে দামি দামি ফ্রিজা। হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় এবং বুঝে না নেওয়ায়, নির্মাণকাজের জন্য নিয়োজিত ঠিকাদারের একজন লোক দিয়ে হাসপাতাল ভবনটি পাহারা দেওয়া হচ্ছে।
ঠিকাদারের পাহারাদার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ভবনটি নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই পাহারা দিচ্ছি। ৫ আগস্টের পর কয়েক দফা ভবনটি দখলের চেষ্টা করে স্থানীয় লোকজন। ভবনটি পড়ে আছে বলেই স্থানীয়রা দখল করার চেষ্টা করছে। রাতের আঁধারে সুযোগ পেলেই বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।’ ঠিকাদার ফরহাদ সরকার জানান, ভবনটি চালু না হওয়ার কারণে চোরেরা জানালার অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম খুলে নিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবন হস্তান্তরের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন না।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হায়াত মুহাম্মদ শাকিউল আজম বলেন, ‘আমরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে হাসপাতালটি বুঝে নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করছি। কিন্তু জনবল নিয়োগ না হওয়ায় তারাও বুঝে নিতে পারছে না। এ কারণেই পড়ে আছে ভবনটি। আর পড়ে থাকার কারণে অনেক কিছুই নষ্ট হতে বসেছে। পড়ে থাকলে জিনিসপত্র নষ্ট হয় এটাই স্বাভাবিক।’