বিশ্বের উদীয়মান দেশগুলোতে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে খরচ এবং মানের বিচারে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে, মানুষ সহজে মানসম্পন্ন চিকিৎসা পরামর্শ পেতে ব্যর্থ হয়। আবার অনেকের জন্য হাসপাতালে বিশেষ চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে তার খরচ বহন করা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। স্বস্তির খবর হলো, এই সকল দুশ্চিন্তা দূর করবে একটি উদ্ভাবনী মোবাইল ভিত্তিক স্বাস্থ্য বীমা পদ্ধতি ‘মাইহেলথ’।
দেশের শীর্ষ ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি এবং দ্রুত ক্রমবর্ধমান মোবাইল ভিত্তিক স্বাস্থ্য ও বীমা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মিলভিক যৌথভাবে মাইহেলথ শীর্ষক একটি মোবাইল ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা ও হাসপাতাল ক্যাশব্যাক সেবা প্রদান করছে। মাইহেলথ ব্যবহারকারীরা ২১২১৬ নম্বরে ডায়াল করে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য ২৪/৭ অভিজ্ঞ ডাক্তারদের চিকিৎসা পরামর্শ পাচ্ছেন। সহজ ও ঝামেলাবিহীন সেবা, জরুরি প্রয়োজনে দ্রুততর সময়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ পাওয়া এবং হাসপাতালে ক্যাশ সুবিধা প্রাপ্তি, এসকল বৈশিষ্ট্যগুলোই মানুষের নজর কেড়েছে।
একটি উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গত বছর মাইহেলথ বাংলাদেশে ৪ সহস্রাধিক বীমা দাবি পরিশোধ করেছে এবং গ্রাহকদের জন্য ২ লক্ষাধিক টেলি-ডাক্তার পরামর্শকের মাধ্যমে পরামর্শ সেবা প্রদান করেছে। পাশাপাশি বিগত এক বছরে, মিলভিক এবং রবি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা এবং ফেনীর স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হেলথ ক্যাম্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেছে। এছাড়াও সপ্তাহব্যাপী মাইহেলথ বীমা দাবি পরিশোধ উদযাপন করেছে, যা এই উদ্ভাবনী স্বাস্থ্য বীমা পদ্ধতির বিষয়ে মানুষের মনে আস্থা তৈরি করেছে।
অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ক্যাশ-ব্যাক সুবিধাপ্রাপ্ত মাইহেলথ ব্যবহারকারী মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমার মা হঠাৎ খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হয়। এরকম কোন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না বিধায় হঠাৎ ব্যয়ের কারণে আমাকে ঋণ নিতে হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে আমার মায়ের ছাড়পত্র দেওয়ার পর আমি মাইহেলথ-এ একটি পরিশোধ অনুরোধ করি। এর দশদিন পরেই, আমি আমার দাবীকৃত টাকা একাউন্টে পেয়েছি। ওই টাকা দিয়ে আমি ঋণ পরিশোধ করি। যদিও আমি কখনো বিশ্বাস করিনি যে, মোবাইলের মাধ্যমে বীমা করা যায় এবং বীমার টাকাটা আমি পাবো। কিন্তু মাইহেলথ তাদের দ্রুততর এবং সহজ সেবা দিয়ে আমার ধারণাই পাল্টে দিয়েছে”।
মোঃ আলাউদ্দিন, একজন ৫০ বছর বয়স্ক ট্যাক্সি চালক যিনি হঠাৎ টাইফয়েড জ্বরের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তিনি তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, “পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হয়ে ১৫ দিন শয্যাশায়ী থাকাতে আমি এবং আমার পরিবারকে কি দুর্দশার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আপনি সহজেই অনুমান করতে পারছেন। আমার চিকিৎসার খরচ দিয়ে আবার পরিবারের ব্যয় বহন করা আমার পক্ষে সত্যিই অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। কিন্তু এই দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যেতে আমার দাবীকৃত টাকা আমাকে খুবই সাহায্য করেছে। আমি আমার দাবীকৃত টাকা মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে কোন জটিলতা ছাড়াই খুব কম সময়ে পেয়েছি এবং দাবী করার প্রক্রিয়াও খুব সহজ ছিল বলে কোনরকম হয়রানির শিকার হতে হয় নি”।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম বীমা গ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি। স্বাভাবিকভাবেই, এই নিরাপত্তার অভাবে অধিকাংশ মানুষকেই কোন দুর্ঘটনার শিকার হলে বা রোগাক্রান্ত হলে খুবই কঠিন একটা পরিস্থিতির মুখোমুখী হতে হয়। তারই প্রেক্ষিতে, নির্ভরযোগ্য বীমা পরিশোধ ট্র্যাক-রেকর্ডসহ ঝামেলাবিহীন এবং সহজে প্রবেশযোগ্য মোবাইল স্বাস্থ্য বীমা পদ্ধতি মাইহেলথ হতে পারে জীবনের কঠিন সময়গুলোর পরম বন্ধু।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর