মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
বগুড়ার গাবতলী ধুনট ও শিবগঞ্জ

আর্সেনিক ঝুঁকিতে ২৫ হাজার পরিবার

বগুড়ায় ২৫ হাজার পরিবার এখন আর্সেনিক ঝুঁকিতে। আর্সেনিকযুক্ত চিহ্নিত নলকূপগুলোর পানি পান নিষিদ্ধ করা হলেও বিকল্প পানির ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে জেলার তিনটি উপজেলায় ৫২৭টি গ্রামের ২৫ হাজার পরিবার এখন আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি পান নিষিদ্ধ করা ওই নলকূপগুলোয় সতর্কসংকেত হিসেবে লাল রঙ দেওয়া প্রলেপ গত এক যুগে ধুয়ে-মুছে গেলেও নতুন করে প্রলেপ দেওয়া হয়নি।

সময়ের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা সেসব ভুলে ওইসব নলকূপের পানি ব্যবহার করায় আর্সেনিকের ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে।

জানা যায়, জেলার শাজাহানপুর, বগুড়া সদর, ধুনট, শিবগঞ্জ উপজেলায় আর্সেনিকের মাত্রা অন্য উপজেলা থেকে বেশি। আর্সেনিক মিটিগেশন ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের আওতায় পল্লী কর্ম-সহায়ক সংস্থা নামে একটি এনজিও ধুনট, গাবতলী ও শিবগঞ্জে ২০০৩ সালে টিউবওয়েলে আর্সেনিকের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়। সে সময় ওই তিনটি উপজেলার ৫২৭টি গ্রামের দুই লাখ পরিবারের ব্যবহৃত ৪৫ হাজার নলকূপের মধ্যে সাত হাজার ৮২৯টিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া যায়। ওই সব নলকূপের পানি যাতে কেউ পান না করে, সেজন্য সেগুলোর গায়ে লাল রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়েছিল। এর পর ওই তিন উপজেলায় আর্সেনিক ঝুঁকিপূর্ণ লাল চিহ্নিত নলকূপের পানি পানে স্থানীয়রা কিছুদিন বিরত থাকেন। কিন্তু বিকল্প পানির ব্যবস্থা না থাকায় ধীরে ধীরে সবাই ঝুঁকি জেনেও ওইসব নলকূপের পানি পান করতে থাকেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ওই সময়ে জেলায় ২১৬ জন আর্সেনিক আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু পরে এ বিষয়ে আর কোনো কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়নি। বগুড়া জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুজ্জামান জানান, জেলায় যে পরিমাণ টিউবওয়েল রয়েছে শতকরা তার আট ভাগে আর্সেনিকের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে জেলার ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে কোথাও কম আবার কোথাও কিছুটা বেশি। আর্সেনিক পাওয়া গেছে এমন নলকূপের পানি পানে বা ব্যবহারে বিধি-নিষেধ করা হয়েছে। আর্সেনিকমুক্ত পানি পান করার জন্য প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। সরকারি অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে কিছু কিছু এলাকায় বিকল্প পানির ব্যবস্থা হিসেবে রিং ওয়েল (পাত কুয়ার মতো) স্থাপন করা হয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। সরকার নতুন করে আবার জেলার সব নলকূপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি।

 

সর্বশেষ খবর