সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

১৪ কোটি টাকার জলাধার কাজে আসেনি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

১৪ কোটি টাকার জলাধার কাজে আসেনি

পৌরসভার উচ্চ জলাধার

নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহের লক্ষ্যে পৌরসভার অধীনে প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি ‘উচ্চ জলাধার’ উদ্ধোধনের পর দিন থেকেই বন্ধ রয়েছে। ভেস্তে গেছে নাগরিকদের ২৪ ঘণ্টা পানি সরবরাহ সুবিধা। আগের মতই দিনে মাত্র দুবার পানি পান পৌরবাসী। তাও আবার বিদ্যুৎ না থাকলে পানি থাকে বন্ধ। জানা যায়, নেত্রকোনা পৌরবাসী দীর্ঘদিন ধরে ২৪ ঘণ্টা পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়ে আসছিলেন পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১-১২ অর্থবছরে ‘মাঝারি শহর পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন’ প্রকল্পের আওতায় দুটি ওভার হেড ট্যাংকি (উচ্চ জলাধার) নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ৬ লাখ ৮০ হাজার লিটার পানি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জলাধার দুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৪ কোটি টাকা। নির্মাণ শেষে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঘটা করে জলাধার দুটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন পৌরমেয়র। রহস্যজনক কারণে উদ্বোধনের পর দিন থেকে এর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে সব সুবিধা দেওয়ার নাম করে ২০১২ সাল থেকে দুই হাজার ৩০০ গ্রাহকের কাছ থেকে মিটার ও ইঞ্চি পদ্ধতিতে বিল সংগ্রহ করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। মোটা অংকের বিল দিয়েও ন্যূনতম সেবা পাচ্ছেন না তারা। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আসলাম মিয়া বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও সাধারণের সেবাই পাচ্ছি না। পানির টাইমে বিদ্যুৎ না থাকলে হতাশায় পড়তে হয়। মিটারের দায়িত্বে যারা আছেন, তারা মনগড়া বিল ধরিয়ে দিয়ে হয়রানি করছেন গ্রাহকদের। পানি ব্যবহার করছি না তারপরও বিল দিতে হচ্ছে। আমরা এ থেকে রেহাই চাই।’ ব্যবসায়ী সুজন মিয়ার ভাষ্য, ‘শুনছিলাম ২৪ ঘণ্টা পানি দিবে এ জন্য পৌরসভা বিল বাড়াইছে। এখন শুধু বিল দেই। সুবিধা আগের মতোই। তার ওপর যুক্ত হয়েছে পানিতে দুর্গন্ধ, ময়লা। পৌরসভার পানি সরবরাহ শাখার প্রকৌশলী নৃপেন্দ্র চন্দ্র জানান, জলাধার দুটি করে দিয়েছে জনস্বাস্থ্য অধিদফতর। আমরা জায়গা দিয়েছি। তারা যে ডিজাইন করেছিল তাতেই দেখা গেছে ভুল রয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহরাজ হোসেন বলেন, এটি জনস্বাস্থ্য ও পৌরসভার যৌথ কাজ ছিল। পৌরসভার তত্ত্বাবধানেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পানি বন্ধ রয়েছে, আমি যোগদানের পর এমন অভিযোগ পাইনি। পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেব। নবনির্বাচিত পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এটার সম্ভাব্য কোনো রেজাল্ট আমাদের হাতে নাই। আমাদের যে ধারণা দেওয়া হয়েছিল তার সঙ্গে কাজটি সঙ্গতিপূর্ণ হয়নি। এখন পৌরসভার যা আর্থিক ব্যবস্থা তাতে আরো ১৮টি পাম্প বসিয়ে এতে পানি উঠানো সম্ভব নয়।

সর্বশেষ খবর