সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

৬২ ট্রেনের ২০টি বন্ধ, বাকিগুলো চলছে জোড়াতালি দিয়ে

লালমনিরহাট রেল বিভাগ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

নিয়মিত ৬২টি ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) ও চালক সংকটে লালমনিরহাটের ছয়টি সেকশনে চলাচলকারী ২০টি ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪২টি চালানো হচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে। ওই ৪২টি ট্রেনের জন্য কমপক্ষে ৩২টি ইঞ্জিন দরকার হলেও আছে মাত্র ১৮টি। এরমধ্যে ১৭টি মেয়াদোত্তীর্ণ। ২৫৪ পদের বিপরীতে চালক রয়েছেন ১৩১ জন। এ কারণে বর্তমানে চলাচলকারী ট্রেনগুলো যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। সমস্যা সমাধানের জন্য চিঠি পাঠানো হলেও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না রেল মন্ত্রণালয়। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনে ছয়টি সেকশনে ১২টি রুট রয়েছে। এগুলো হচ্ছে— লালমনিরহাট-বুড়িমারী, লালমনিরহাট-তিস্তা-রমনা বাজার, লালমনিরহাট-পার্বতীপুর, লালমনিরহাট-সান্তাহার, পার্বতীপুর-বিরল ও কাঞ্চন-পঞ্চগড়। সূচি অনুযায়ী এসব রুটে প্রতিদিন ২৪টি মেইল এক্সপ্রেস, ২৬টি লোকাল-মিক্সড এবং ১২টি আন্ত:নগর এক্সপ্রেস চলাচল করার কথা। কিন্তু চালক ও ইঞ্জিনের অভাবে ইতোমধ্যে ২০টি ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট রেল বিভাগের নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রতিদিন ৬২টি ইঞ্জিন প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে রয়েছে মাত্র ৩২টি। এর মধ্যে মেরামত অযোগ্য হওয়ায় ছয়টি ইঞ্জিন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আটটি ট্রেন পরিচালনায় ‘অক্ষম’ হওয়ায় সেগুলো স্টেশনে শুধু শান্টিংয়ের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বাকি ১৮টি দিয়ে কোনো রকম চালানো হচ্ছে ৪২টি ট্রেন। লালমনিরহাট বিভাগীয় সহকারী পারসোনেল অফিসার সাজ্জাদ হোসেন জানান, লালমনিরহাট রেল বিভাগের কাছে পরিত্যক্ত, অক্ষম ও সচল মিলিয়ে ৩২টি ইঞ্জিন রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৬১ সালে আমেরিকা থেকে ১১টি, কানাডা থেকে ১৯৬৯ সালে আটটি ও ১৯৭৮ সালে নয়টি, ১৯৮১ সালে হাঙ্গেরি থেকে তিনটি এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা হয়েছে একটি। সাধারণত প্রতিটি ইঞ্জিনের ‘ইকোনমিক আয়ু’ ধরা হয় ২০ বছর। অথচ ১১টির বর্তমান বয়স ৫৫, আটটির ৪৭, নয়টির ৩৮, তিনটির ৩৫ বছর। লালমনিরহাট বিভাগীয় চিফ পাওয়ার (লোকোমোটিভ) কন্ট্রোলার আদম আলী জানান, এ বিভাগের কাছে থাকা আমেরিকার ১১টি ও হাঙ্গেরির তিনটি ইঞ্জিন ট্রেন পরিচালনার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কানাডার ১৭টি ও দক্ষিণ কোরিয়ার একটি দিয়ে কোনো রকম ট্রেন চলছে। রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক নাজমুল হোসেইন বলেন, ‘লোকোমোটিভের জরুরি প্রয়োজন। বিষয়টি জানিয়ে নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিচ্ছি’।

সর্বশেষ খবর