ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় হাওরবেষ্টিত চাতলপাড় ইউনিয়নের চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ। উপজেলা সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় বিশ কিলোমিটার। ১৯৯১ সালে এক একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ। বর্তমানে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৬০০। ওই কলেজ মাঠে প্রতি বুধবার পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখে বসানো হয় সাপ্তাহিক পশুর হাট। বছরে সরকারি ছুটির কারণে কলেজটি বন্ধ থাকে ৮৫ দিন আর পশুর হাটের কারণে বন্ধ থাকে আরও ৪৮ দিন। ঈদুল আজহার সময় প্রায় ৫-৭ দিন বন্ধ থাকে। সব মিলিয়ে বছরে বন্ধ থাকে ১৪০ দিন। যেদিন কলেজ মাঠে পশুর হাট বসে সেদিন কলেজে ক্লাস হয় না। এদিকে পাশেই চাতলপাড় ওয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। পশুর হাটের কারণে বিদ্যালয়টিতেও ঠিকমতো ক্লাস হয় না বলে অভিযোগ। এ নিয়ে কলেজ ও স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ রয়েছে। বাজারটি অপসারণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের নির্দেশে কলেজ কর্তৃপক্ষ রেজুলেশন করে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন দেওয়ার পরও বন্ধ হচ্ছে না এ পশুর হাট। শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, সপ্তাহের প্রতি বুধবার চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ মাঠ বন্ধ করে বসানো হয় পশুরহাট। হাট চলাকালে পুরো কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়। পরের দিন পশুর মল-মূত্র ও বিষ্টার দুর্গন্ধে ক্লাসে বসাও দুরূহ ব্যাপার হয়ে ওঠে।
ফলে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত খেলা-ধুলাসহ পাঠ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আরিফ বিল্লাহ ও সঞ্জয় রায় বলেন, আমরা চাই অতি দ্রুত কলেজ চত্বর থেকে গরুর বাজারটি সরিয়ে নেওয়া হোক এবং কলেজের চারপাশে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
হাটের ইজারাদার বিনয় রায় জানান, উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে হাটের ইজারা নিয়েছি। প্রশাসন যদি কলেজ মাঠে হাট বসাতে না চায় তাহলে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। চাতলপাড় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবদুল আহাদ জানান, আগে পশুর হাটটি স্কুল মাঠে হতো এখন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইজারার মাধ্যমে কলেজ মাঠে হচ্ছে। নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা আশরাফী বলেন, কলেজ মাঠে পশুর হাট বসতে দেওয়া হবে না। হাট অন্যত্র সরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।