বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা প্রতিরোধে কৌশল আবিষ্কার ডুয়েটের তিন গবেষকের

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

করোনা প্রতিরোধে কৌশল আবিষ্কার ডুয়েটের তিন গবেষকের

গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) তিন অধ্যাপক করোনাভাইরাস প্রতিরোধের কৌশল আবিষ্কার করেছেন। তিন গবেষক হলেন- যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সাহিদ এবং কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল কাশেম। তাদের গবেষণাপত্রটি এখন একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে রিভিউয়ে আছে। চূড়ান্তভাবে এটি প্রকাশ হলে পরবর্তী বিষয়ে গবেষকরা বিস্তারিত জানাবেন। অধ্যাপক আসাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, তারা করোনাভাইরাসের বিভিন্ন প্রোটিন পর্যবেক্ষণ করে তাদের প্রকৃতি ও নেতিবাচক দিক নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করেন। প্রোটিনগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখেন এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা শ্বাসনালিসহ মানবদেহের ক্ষতি করতে সক্ষম। এমনকি মানুষের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। এসব রাসায়নিক উপাদান নিবিড়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান করে তারা দেখতে পান ভাইরাসের মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক গ্রুপ রয়েছে। তারা গবেষণা করে দেখতে পান এই রাসায়নিক গ্রুপের উপাদানগুলোকে অকার্যকর ও নিষ্ক্রিয় করতে অন্য রাসায়নিক গ্রুপের প্রভাব রয়েছে। এই অবস্থায় দেশীয় ও সহজলভ্য রাসায়নিক গ্রুপের বিভিন্ন উৎস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকেন। এটি করতে গিয়ে দেখেন, আমাদের দেশের বিভিন্ন উদ্ভিদের মধ্যে এই উপাদানগুলো বিদ্যমান রয়েছে। যা একটি মেকানিজম অনুসরণ করে করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে বলে ধারণা করেন তারা। তবে সেটিকে ওষুধ বা প্রতিষেধকে রূপান্তর করতে মাইক্রোবায়োলোজি ও ফার্মাসিস্ট বিশেষজ্ঞদের কাজ করতে হবে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এর সুফল তাদের আনতে হবে। এই গবেষকরা তাদের গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তারা প্রাথমিকভাবে উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে কেমিক্যাল গ্রুপকে ব্যবহার করেছেন যা করোনাভাইরাসের খারাপ প্রোটিনগুলোর ওপর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে বলে মত পোষণ করেন। এই গবেষণার খুঁটিনাটি দিক নিয়ে পরীক্ষা চলছে। গবেষক দল মনে করেন এখান থেকে ওষুধ বা প্রতিষেধক তৈরির আগে পুষ্টিবিদদের মাধ্যমে এই সব উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক গ্রুপের একটি তালিকা সরকার প্রকাশ করতে পারে। এতে সাধারণ মানুষ এই খাদ্যগুলো তাদের দৈনন্দিন খাবার তালিকায় রেখে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী তারা। এছাড়া ইলেকট্রো-ইস্পান পদ্ধতি ব্যবহার করে এই তিন গবেষক এন্টি-ভাইরাল ন্যানো-মেমব্রেনে তৈরি করেছেন। এই ধারণা চিকিৎসকসহ সাধারণ মানুষের এন্টি-ভাইরাল পোশাক, গ্লাভস ও মাস্কসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরিতে সহায়তা করবে। গবেষক দলটি আশাবাদী তাদের এই পরিবেশ ও মানববান্ধব আবিষ্কার বাংলাদেশসহ পৃথিবীর মানুষের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে তারা গবেষণাটির বিভিন্ন দিক নিয়ে অন্যদেরও কাজ করার আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর