মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

লকডাউনে টমেটোর ক্রেতা নেই

দাউদকান্দি প্রতিনিধি

লকডাউনে টমেটোর ক্রেতা নেই

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে টমেটোর বাম্পার ফলন হলেও লকডাউনে বন্ধের কারণে হাট বাজারে ক্রেতা প্রায় শূন্য থাকায় টমেটোর দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন টমেটো চাষিরা। খরচ না উঠার সম্ভাবনায় অনেক কৃষক খেত থেকে টমেটো তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে মাঠ থেকে কাঁচা টমেটো ৩ টাকা ও পাকা টমেটো ৫ টাকা কেজির দাম থাকলেও পাইকারেরা গত দু’সপ্তাহ ধরে, পাইকারি ভাবে টমেটো কিনছেন না। কৃষকরা জমি থেকে টমেটো উত্তোলন করে হাট-বাজার বা অস্থায়ী বিক্রয় কেন্দ্রে নিলেও লোক সমাগম না থাকায় শ্রমিকের মজুরি বাদ দিলে কৃষকের হাতে কিছুই থাকছে না। দাম না পাওয়ায় টমেটো এখন গরুর খাবার ও রাস্তার পাশে ফেলে রাখা ছাড়া অনেক কৃষক জমি থেকে টমেটো উত্তোলন করছেন না। দাউদকান্দি উপজেলার একাধিক টমেটো চাষিরা জানিয়েছেন, শুরুর দিকে লাভের মুখ দেখলেও মৌসুমের শেষের দিকে এসে লকডাউনের বন্ধের কারণে উৎপাদন খরচ তুলতে কৃষকরা অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রণোদনা ছাড়াও আগামী মৌসুমে এ অঞ্চলে সরকারিভাবে টমেটো বা সবজি সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নির্মাণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দাবি জানিয়েছেন অনেক কৃষক। দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার সারোয়ার আলম বলেছেন দাউদকান্দিতে এবার টমেটো ফলন ভালো হয়েছে, তবে লকডাউনের বন্ধের কারণে বাজারে প্রায় ক্রেতা শূন্য থাকায় কৃষকরা প্রকৃত দাম পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, এ মৌসুমে এ উপজেলায় ৩০০ হেক্টরের কিছু বেশি জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। উপজেলার দশপাড়া কৃষক সোহেল, ৭০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি। টামটা গ্রামের কৃষক সাদেক বলেন, আমি ৮০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার টমেটোর ফলন ভালো। কিন্তু দাম একেবারেই নেই। গত বছরেও তাদের লোকসানে পড়তে হয়েছিল রোগ-বালাইয়ের জন্য। আর এবার লকডাউন বন্ধের কারণে দাম না পেয়ে লোকসানে পড়তে হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কৃষকরা টমেটোর আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। একই গ্রামের টমেটো চাষি আব্দুল হক, ৩০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত টমেটো বিক্রি করেছি মাত্র ১০ হাজার টাকায়। ১৫ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৩০ হাজার টাকা খরচের টাকা উঠবে না। সুন্দলপুরের কৃষক সোহেল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে আবাদি জমি থাকবে না তারই কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে, দাউদকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমনের অনুপ্রেরণায় ১০ পাড়া গ্রামের চার বন্ধু এই প্রথম কৃষি কাজ শুরু করেন। সুন্দলপুর ইউনিয়নের ১০ পাড়া গ্রামের ফসলি খেতে চার বন্ধু আড়াই কানি জমিতে টমেটোর চাষ করেন, প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে কৃষি খেতে ভাইরাসের কারণে অনেক টমেটো গাছ মরে যাওয়া ও করোনাভাইরাসের লকডাউনের বন্ধের কারণে  লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর