শিরোনাম
বুধবার, ৫ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

নিয়মনীতির বালাই নেই নৌরুটে যাত্রী হয়রানি চরমে

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর

নিয়মনীতির বালাই নেই নৌরুটে যাত্রী হয়রানি চরমে

কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই দীর্ঘদিন থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া নৌরুটে স্পিডবোট চলাচল করছে। এতে করে নানাভাবে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ অনেক আগে থেকেই। কিন্তু পথের অভিযোগ পথেই আছড়ে পড়ছে। কানেও তোলেননি দায়িত্বশীল কেউ। এতে করে ক্ষোভ বিরাজ করছে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের। এ অনিয়মের কারণে গত সোমবার ভোরে স্পিডবোট ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এদিন মাদারীপুরের শিবচরে বাল্কহেডকে ধাক্কা দিয়ে স্পিডবোট ডুবে ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বোটের মালিক-চালকসহ চারজনের নামে মামলা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ রুটে ৮৭টি লঞ্চ, ২ শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করে। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুট। প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে ১০-১২ হাজার মানুষ পদ্মা পাড়ি দেন। তাদের চলাচলের অন্যতম মাধ্যম সি-বোট ঘাট। সি-বোট ঘাট জেলা পরিষদের অধীনে অতীতে ইজারার মাধ্যমে পরিচালিত হলেও এখন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। জানা গেছে, সি-বোটে পদ্মা পার হতে দরপত্র অনুযায়ী জনপ্রতি ১২০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা। সন্ধ্যার পর সি-বোট চালানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় প্রতিদিন পারাপার করা হচ্ছে। ইজারার শর্ত অনুযায়ী ভাড়ার তালিকা বোটঘাটে টানিয়ে দেওয়া কিংবা টিকিটের গায়ে উল্লেখ থাকার কথা থাকলেও এ শর্ত মানা হচ্ছে না। যাত্রী ওঠানো এবং নামানোর জন্য ঘাটে নেই সুব্যবস্থা। ঝুঁঁকি নিয়েই উঠতে হচ্ছে যাত্রীদের। রাতে সি-বোটে পার হতে গিয়ে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে যাত্রীর প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। একেকটি মাঝারি সি-বোটে ১২-১৪ জন যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও গাদাগাদি করে নেওয়া হচ্ছে ২৫-৩০ জন। পারাপারের সময় প্রতিজনের লাইফ জ্যাকেট গায়ে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বিশেষ করে নারী ও শিশু যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিতে হচ্ছে। আর সি-বোট চালকদের নেই কোনো সনদ কিংবা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ক্ষমতাশীন দলের একাধিক নেতার নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসন, ইজারাদার, চালকদের নিয়ে ঘাটের দুই পাড়ে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেই নিয়ন্ত্রণ করে ঘাটের দুই পাড়। এরাই ভাড়া বৃদ্ধি, যাত্রীদের মারধর ও হয়রানি করে থাকে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী যাত্রীদের। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, এ রুটে প্রতিদিনই অবৈধভাবে প্রচুর স্পিডবোট চলাচল করছে। যা প্রশাসনের জ্ঞাতসারেই চলছে। হয়তো এ মুহুর্তে পরিস্থিতির কারণে কয়েকদিন চলাচল বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেই আবার সরব হয়ে উঠবে এসব বোট। বরিশালের যাত্রী সাগর খান জানান, এ সিন্ডিকেটের কাছে যাত্রীরা জিম্মি। এ সিন্ডিকেটের অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই শারীরিক নির্যাত করে। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে। আমরা এর বিচার চাই। বোটের যাত্রী মাদারীপুরের বাসিন্দা সেলিম হোসেন বলেন, ৩০০ টাকায় টিকিট কিনেছি, কিন্তু টিকিটের গায়ে কোনো মূল্য লেখা নেই।

সর্বশেষ খবর