বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সড়ক নির্মাণে বালুর বদলে কাদামাটি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

সড়ক নির্মাণে বালুর বদলে কাদামাটি

কাঁচা সড়ক দিয়ে চলাচলে দুর্ভোগ ছিল নিত্যসঙ্গী। সবচেয়ে বেশি কষ্ট করতে হতো বর্ষার মৌসুমে। তবে সড়কটি পাকা হওয়ার খবরে মানুষের মনে বইছিল কষ্ট লাঘবের আনন্দ। তবে তাদের সেই আনন্দ এখন ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। কেননা সড়ক নির্মাণে বালুর বদলে ব্যবহার করা হয়েছে কাদামাটি। এতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় ঘটেছে এমন ঘটনা। জানা গেছে, উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের ধুরুয়াবাজার, তেরশিরা বাজার, নিমতলী হয়ে ঈশ্বরগঞ্জের ভাতরী বাজার এলাকায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। প্রায় ৪ হাজার ২৫০ মিটার সড়কটি পাকাকরণের কাজ শুরু হয় মার্চে। প্রায় ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটির নির্মাণ কাজ পায় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কটির নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। স্থানীয়রা জানান, মার্চের প্রথম সপ্তাহে সড়কটির বালু ভরাট করার কাজ শুরু হয়। গত কয়েক দিন ধরে সড়কটির তেরশিরা অংশে বালুর পরিবর্তে ড্রেজার দিয়ে পুকুর থেকে তোলা কাঁদা মাটি ব্যবহার শুরু করায় স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়। কী কী ধরনের কাজ হবে সড়কটিতে সেই তথ্য সংবলিত সাইন বোর্ড টানানো হয়নি প্রকল্প এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে গতকাল এলাকার লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসন্তোষের কথা জানিয়ে লাইভ ভিডিও প্রকাশ করে। পরে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও কার্য-সহকারী। ওই সময় সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়েন তারা। এক ফুট করে বালু থাকার পরিবর্তে কোদাল দিয়ে খুঁড়ে কাদামাটি না বালু তা প্রকৌশল দফতরের প্রতিনিধিদের দেখানোর চেষ্টা করেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা বলেন, সড়কের অনেকাংশ বালু ফেলা হলেও তাদের এলাকায় কাঁদা মাটি ফেলা হচ্ছে। এর মধ্যে সড়ক পাকা করা হলে ওই সড়ক দ্রুত ফেটে যাবে। রামগোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সিকদার বলেন, কোটি টাকার সরকারি সড়ক যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই করবে এটি তো মেনে নেওয়া যায় না। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সড়কটি যেন সঠিকভাবে করা হয় কর্তৃপক্ষের কাছে সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। ঠিকাদার মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কাজটির তদারকির দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিয়ার রহমান বলেন, ঠিকাদার শম্ভুগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করে ভালো বালু ফেলছিল। কিন্তু এলাকার কিছু লোক সড়ক দিয়ে ট্রাক প্রবেশ করতে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় বিকল্প হিসেবে পুকুর থেকে ড্রেজিং করে বালু ফেলছে। সেগুলোও ভালো। প্রকল্পের তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ডও দ্রুত স্থাপন করা হবে। গৌরীপুরের উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, বালু পরীক্ষা করে দেখা হবে। যদি খারাপ হয় তাহলে সরিয়ে ফেলা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাসান মারুফ বলেন, সড়কটি পরিদর্শন করা হয়েছে। কাদামাটি সরিয়ে ফেলে যথাযথভাবে নির্মাণ কাজ করতে এলজিইডিকে বলা হয়েছে। তবে তারা যদি সঠিকভাবে কাজ না করেন তাহলে পরবর্তীতে বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হবে। পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর