শনিবার, ৮ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

পাঁচ হাজার দর্জির মানবেতর জীবন

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

পাঁচ হাজার দর্জির মানবেতর জীবন

করোনাভাইরাসের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ৫ হাজার দর্জি কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েছেন। আগে সারা বছরই কাজে ব্যস্ত সময় কাটত দর্জিদের। প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের আগে সেই ব্যস্ততা আরও বেড়ে যায়। রাত-দিন মিলিয়ে গ্রাহকদের কাপড় সেলাই করেন কারিগররা। কিন্তু এবারের  প্রেক্ষাপট একেবারেই উল্টো। কাজের আশায় অলস সময় পার করতে হচ্ছে তাদের। মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দর্জিদের কাজ কমেছে অন্তত ৬০ শতাংশ। এতে করে ৫ হাজার দর্জি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত এ জেলায় হেফাজতে ইসলামের চালানো তান্ডব এবং করোনার সংক্রমণ রোধে লকডাউনের কারণে  দোকানপাট বন্ধ থাকায় ঈদের কাজের অর্ডার নিতে পারেননি দর্জিরা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া  জেলায় নারী ও পুরুষের পোশাক এবং পাঞ্জাবি সেলাই করা হয়- এমন অন্তত দুই হাজার দর্জি দোকান আছে। এসব দোকানে কর্মসংস্থান হয়েছে অন্তত ১০ হাজার কারিগরের। এই কারিগরদের হাতে সারা বছরই কাজ থাকে। তবে রোজার মাস শুরু হওয়ার অন্তত ১০ দিন আগে থেকে দর্জিদের কাজের চাপ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এমনিতে বছরের অন্য সময়গুলোতে ছোট দোকানগুলোতে গড়ে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকার কাজের অর্ডার আসে, মাঝারি  দোকানগুলো গড়ে ১ লাখ এবং বড় দোকানগুলোতে প্রায় ২ লাখ টাকার কাজের অর্ডার পাওয়া যায়। সব খরচ মিটিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ লাভ হয় বলে জানিয়েছেন দর্জি দোকানিরা। তবে  রোজার মাসে ছোট দোকানগুলোতে প্রায় ১ লাখ টাকা ও মাঝারি  দোকানগুলোতে ২ লাখ এবং বড় দোকানগুলোতে প্রায় ৪ লাখ টাকার কাজের অর্ডার আসে। কারিগররা তখন রাত-দিন মিলিয়ে কাজ করে অর্ডার ডেলিভারি দেন। অবশ্য বাড়তি কাজের জন্য বাড়তি পারিশ্রমিকও দেওয়া হয় কারিগরদের। কাজের চাপের কারণে ১০ রোজার পর থেকেই কোনো দর্জি দোকানে নতুন করে কাজের অর্ডার নেওয়া হয় না। কিন্ত এখন করোনাভাইরাসের কারণে কাজ কমে যাওয়ায় অনেকটা অলস সময় কাটছে কারিগরদের। কাজ কমে যাওয়ায় অনেক কারিগর কর্মহীন হয়ে পেশা বদল করে এখন দিনমজুরি করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে আরও অনেক কারিগর বেকার হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর