রবিবার, ৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

তদন্ত প্রতিবেদনে মেম্বারকে অভিযুক্ত, ইউএনওকে সতর্ক

নারায়ণগঞ্জে ৩৩৩ ফোনে ত্রাণ চেয়ে উল্টো জরিমানা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

তদন্ত প্রতিবেদনে মেম্বারকে অভিযুক্ত, ইউএনওকে সতর্ক

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম দেওভোগ নাগবাড়ি এলাকায়ে সরকারি হটলাইন ৩৩৩-এ ফোন করে ত্রাণ চেয়ে উল্টো জরিমানা দেওয়া নিয়ে গতকাল ঘটনায় প্রতিবেদন দিয়েছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। এতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আইউব আলীর ভুলেই পুরো ঘটনাটির সূত্রপাত উল্লেখ করা হয়েছে। বিপরীতে ওই ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তি দেওয়া সদর উপজেলার ইউএনও আরিফা জহুরাকে সতর্ক করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন আজ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। গতকাল নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। ৫ পাতার এ প্রতিবেদনের সঙ্গে ১২৬ পাতার বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র ও ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক আরও জানান, ৫ পাতার প্রতিবেদনে পুরো ঘটনার জন্য ইউপি মেম্বারের ভুল তথ্যের বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। ৩৩৩-এ ফোন দেওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্যাদি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি ইউএনওর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি উল্লেখ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব ক্ষেত্রে ইউএনওকে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এখন থেকে ৩৩৩ নম্বরে যেসব কল আসবে তাদের বিষয়ে যাচাই বাছাইয়ের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, মসজিদের ইমাম ও গণমাধ্যম কর্মীদের অবহিত করে যাচাই-বাছাই করতে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে। এই তদন্ত প্রতিবেদনটি আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করব। মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবে। জানা যায়, গত ১৮ মে জাতীয় কলসেন্টার ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্য সহায়তা চান কাশীপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের নাগবাড়ির বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ ফরিদউদ্দিন খান। দুই দিন পর ২০ মে ওই এলাকায় গিয়ে সদর ইউএনও আরিফা জহুরা ফরিদ উদ্দিনকে উল্টো শাস্তিস্বরূপ ১০০ প্যাকেট খাদ্য সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেন। খাদ্য না দিলে তাকে তিন মাসের জেল দেওয়া হবে বলেন ইউএনও। ১০০ জনকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার মতো সামর্থ্য না থাকলেও জেলে যাওয়ার ভয়ে নিজের স্ত্রী ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর গয়না বিক্রি ও ধারদেনা করে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন ফরিদউদ্দিন খান। এমনকি স্থানীয় ইউপি সদস্য আইউব আলী কাছ থেকেও ১০ হাজার টাকা সুদে ধার নেন। ওই ঘটনায় অপমানে ক্ষোভে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন ফরিদ।

সর্বশেষ খবর